স্টাফ রিপোর্টার।। সিলেট
হবিগঞ্জ জলসুখা জমিদার বাড়ির তথ্য খুঁজতে গেলে ইতিহাসে জলসুখার প্রথম জমিদার হিসেবে সর্বাগ্রে বেরিয়ে আসে গঙ্গারাম দাস চৌধুরীর নাম। তবে বর্তমান সময়ে সংবাদ উপস্থাপনায় বাদ পড়ছেন তিনি! বাদ পড়ছে তাঁর প্রপৌত্র রামনারায়নের মুসলমান শাখার বংশধররাও। দেশের পরিচিত কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের অনলাইন সংস্করণে এমনটাই দেখা গেছে! জলসুখা জমিদার বাড়ির ইতিহাস বলতে পাঠকদের সামনে উপস্হাপন করা হচ্ছে শুধু চৌদ্দ জমিদারের কথা, তুলে ধরা হয় বাবু গিরিশ রায়ের জমিদারিত্ব। কিন্তু এর মাঝে অনুল্লেখ থাকছেন চারশো বছরের প্রাচীন জমিদার গঙ্গারাম দাস চৌধুরী। যিনি ভারতের দিল্লিশহর থেকে বর্তমান পরিচিত হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জের জলসুখায় স্বপরিবারে এসেছিলেন বসবাসের উদ্দেশ্যে। জলসুখার খাছারিঘাটের খাছারি এটি মুলত গঙ্গারামের আমল থেকেই ছিলো যা অনেক আগ থেকেই বিলুপ্ত।
তথ্য রয়েছে গঙ্গারামদাসের পুত্র ছিলেন গঙ্গানারায়ন তার পুত্র রামনারায়ণ দাস চৌধুরী তিনি জমিদারিত্বের দাপট খাটানো কোনো একটি ঘটনার প্রতি ঘৃণাপোষণ করে নিজের জাত বদলে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। মুসলমানিত্ব হাসিল করে নাম ধারণ করেন রহমত উল্লা চৌধুরী। জাত বদলের কারণে জমিদারিত্বের অর্ধাংশ নিয়ে ত্যাজ্যপুত্রের শিকার হন তিনি। গৃহালয় ছেড়ে পরবর্তীতে বসতিস্থাপন করেন বানিয়াচংয়ের শাখাইতি নামক গ্রামে, সেখানে তার মুসলমান শাখার জমিদারিত্বের ইতিহাস সূচিত হয়।
একসময় রহমত উল্লা চৌধুরীর প্রপৌত্রের পুত্র শরিয়ত উল্লাহ চৌধুরী জমিদারি সম্পত্তি ধরে রাখতে ব্যর্থ হলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ২৬০ টি মৌজার ১৭৪১একর জমি ওয়াক্ফ করে ১৯১৬ ইংরেজিতে গঠন করেন শরিয়ত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াক্ফ এস্টেট। যা বর্তমানেও সরকারি ওয়াক্ফ তালিকায় রয়েছে। এই এস্টেটের প্রথম মোতাওয়াল্লী ছিলেন শরীয়ত উল্লাহ নিজেই। তৎকালিন সময়ে খাজনা আদায়ের দায়িত্বে অবহেলা করায় নিযুক্তদের বাদ দিয়ে শরিয়ত উল্লার ভাতুস্পুত্র ও প্রপৌত্রগণ দায়িত্ব পালন করেছেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মাস্টার আব্দুল মনাফ চৌধুরী। তিনি ১৯৪২ ইংরেজিতে পরলোকগমন করেন। তার ছেলে এই বংশের প্রথম ইসলামি শিক্ষিত পাকিস্তান আমলের প্রবিন আলেম মরহুম মাওঃ আশরাফ মিয়া চৌধুরী ও ভাতুস্পুত্র মরহুম আফতাব উদ্দিন চৌধুরীর ডায়েরি সহ বিভিন্ন দলিলাদির মাধ্যমে ওঠে আসে গঙ্গারাম সম্পর্কে এসব তথ্য।
রামনারায়ন (রহমতুল্লাহ চৌধুরীর) হিন্দু শাখার বংশধর এখনো ভারতে বসবাস করছেন বলে জানিয়েছেন শরীয়ত উল্লাহ চৌধুরী এস্টেটের মোতাওয়াল্লী এমদাদ হোসেন চৌধুরী। মুসলমান শাখার বংশধরদের অনেকই দেশের বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। ইতিহাস তথ্য ঘাটাঘাটি করলে দেখা যায় হিন্দু জমিদারদের মধ্যে দাস ও রায় পরিবার এবং মুসলমান এক পরিবার মিলে এই তিন জমিদার পরিবারের রামরাজত্ব ছিলো জলসুখায়।
জলসুখা জমিদার বাড়ি নিয়ে স্হানীয় আলহাজ তাসদিকুল ইসলাম জানান এই গ্রামে ভারতের বংশ ছাড়াও পাকিস্তান ইরানের বংশবনিয়াদের আবির্ভাব হয়েছিলো। তিনি বলেন জনস্রোতিতে আছে একমাত্র মুসলমান জমিদার রমজান আলী ওরুফে বুছামিয়া তিনি রাজা গবিন্দ খা এর বংশ থেকে জাত বদলে মুসলমান হয়ে এখানে এসে বসতিস্হাপন করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। যারদরুন মুসলমান জমিদার পরিবার ছিলো খুব শক্তিশালী। সরেজমিন দেখা যায় জলসুখা জমিদার বাড়ির আজকের অবস্হা খুবই নাজেহাল। ভবন গুলোর ধ্বংসাবশেষ জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে আছে। এর মধ্যে কোনোরকম বনের ঝোপের ভেতর লুকিয়ে আছে বাবু গিরিশ রায়ের একটি ভবন, ময়লার স্তুপে ফেলে রাখা হয়েছে তিনশত বছরের পুরোনো লোহার সিন্দুক। বাড়ির সামনে বিশাল আকারে চৌদ্দ কেয়ার জমির পুকুর এখন ময়লার ভাগার। একমাত্র বাবু গিরিশ রায়ের বাড়িটি ব্যতিত বাকি গুলো দখলে নিয়েছে সুবিধাভোগীরা।
সম্পাদক: ময়নুল হক পবন, প্রকাশক: রিয়াজুল হক রেজা, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মোহাম্মদ জয়নুল হক.
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়,কামাল প্লাজা (১ম তলা), কুলাউড়া, মৌলভীবাজার,ফোন: ০১৭১১-৯৮৩২৬৯
ঠিকানা: 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢 𝐈𝐧𝐯𝐞𝐬𝐭𝐦𝐞𝐧𝐭 𝐩𝐚𝐫𝐤 𝐃𝐈𝐏, 𝐀𝐥 𝐁𝐚𝐲𝐚𝐧 𝐁𝐮𝐢𝐥𝐝𝐢𝐧𝐠 𝟐𝟎𝟏𝟏, 𝐏.𝐎 𝟏𝟎𝟎𝟏𝟐𝟏- 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢. সংবাদ, ছবি ও বিজ্ঞাপন পাঠানোর ঠিকানা: Email: kulauradorpon@gmail.com ওয়েবসাইট: www.kulaurardarpan.com,
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত