স্টাফ রিপোর্টার।
হবিগঞ্জের কুলাউড়ায় দাফনের ১৭ দিন পর রবিউল ইসলাম নাইম (১৪) নামের ওই কিশোরকে নবীগঞ্জ থেকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার একটি ডোবা থেকে উদ্ধার অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোরের লাশকে রবিউল ইসলাম নাইম দাবি করে দাফন করেন তার বাবা-মা ও স্বজনরা। তবে নাইম দাবি করা লাশটি কার।
এরপর শুক্রবার (২২ আগস্ট) নবীগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় জীবিত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। জীবিত উদ্ধার হওয়া রবিউল ইসলাম নাইম ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার এলাকার গদিয়াচর গ্রামের কনাই মিয়ার ছেলে।
পরে কুলাউড়া থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয় এবং শনিবার (২৩ আগস্ট) জবানবন্দি নেওয়ার জন্য মৌলভীবাজার আদালতে পাঠায়। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি শেষে তার পরিবারের জিম্মায় দেয় হয়েছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
রবিউল ইসলাম নাইম সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার গদিয়াচর গ্রামের কনাই মিয়ার ছেলে। তবে রবিউল জীবিত থাকলেও এ ঘটনায় হত্যা মামলায় প্রধান আসামি হয়ে কারাগারে রয়েছেন রেস্টুরেন্ট মালিক বুলবুল ফকির। তিনি বগুড়ার শিবগঞ্জের বাসিন্দা।
এর আগে কুলাউড়ার বরমচাল ইউনিয়নে রেললাইনের পাশের একটি ডোবা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে এক কিশোরের লাশ উদ্ধারে এক চাঞ্চল্যকর মোড় নিয়েছে ওই ‘লাশের গল্প’।
ওই কিশোরকে রবিউল মনে করে তার মৃত্যু ধরে নিয়ে মামলা নেওয়ার দাবিতে স্বজনরা সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিলেটের ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার এলাকায় ব্রাহ্মণগ্রাম সুপ্রিম ফিলিং স্টেশন মার্কেটের বগুড়া রেস্টুরেন্টের কর্মচারী ছিলেন রবিউল ইসলাম নাইম। গত ২৬ জুলাই রেস্টুরেন্ট থেকে সে নিখোঁজ হয়।
এদিকে গত ৩ আগস্ট বরমচাল ইউনিয়নের রেললাইন সংলগ্ন একটি ডোবা থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক কিশোরের (বয়স আনুমানিক ১৩) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারকৃত নিহতের কিশোরের পরনে লাল রংয়ের টি-শার্ট, নীল জিন্সের পেন্ট এবং কফি কালারের শার্ট ছিল বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
খবর পেয়ে ওই কিশোরের লাশটি তাদের ছেলে রবিউলের দাবি করে শনাক্ত করেন তার বাবা কনাই মিয়া ও মা পারুল বেগম। পরবর্তীতে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার লাশ ৫ আগস্ট দাফন সম্পন্ন হয়।
রবিউলের পরিবার জানায়, বগুড়া রেস্টুরেন্টের মালিক বুলবুল তাদের ছেলে রবিউলকে হত্যা করে কুলাউড়ায় লাশ ফেলে রেখেছে। পরে লাশ উদ্ধারের পর ওসমানীনগর ও কুলাউড়া থানায় মামলা করতে চাইলে প্রথমে দুটি থানাই মামলা নিতে গড়িমসি করে।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ৬ আগস্ট লাশ নিয়ে রবিউলের মা পারুল বেগম ও স্বজনরা সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন। একপর্যায়ে রবিউল ইসলামের মা পারুল বেগম বাদী হয়ে রেস্টুরেন্টের মালিক বুলবুল ফকিরসহ হোটেল স্টাফদের বিরুদ্ধে কুলাউড়া থানায় মামলা করা হয়। পুলিশ ওই মামলায় রেস্টুরেন্ট মালিক বুলবুল ফকিরকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
মামলার তদন্ত করতে গিয়ে কুলাউড়া থানার এসআই মুস্তাফিজুর রহমান একদল পুলিশ নিয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় নিখোঁজ রবিউলকে শুক্রবার সন্ধ্যায় তার আত্মীয় নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের সৈয়দপুর এলাকার মো. জুবেলের বাড়ি থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। এ সময় কিশোরের মা পারুল বেগম ও মামা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর ফারুক বলেন, গত ২৬ জুলাই রেস্টুরেন্ট থেকে নিখোঁজ হওয়া রবিউল আত্মগোপনে ছিল। শুক্রবার নবীগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় রবিউলকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, রেস্টুরেন্টের মালিকের সঙ্গে মনোমালিন্যতার জন্য সে আত্মগোপনে ছিল। বিজ্ঞ আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে সে আত্মগোপনে ছিল বলে স্বীকার করেছে।
এদিকে গত ৩ আগস্ট মৌলভীবাজারের কুলাউড়া রেলস্টেশনের পাশের একটি ডোবা থেকে যে কিশোরের লাশ উদ্ধারকৃত রবিউল পরিচয়ে দাফন করা হয়েছে এখন পর্যন্ত ওই কিশোরের পরিবার বা অন্য কোনোপক্ষ থেকে খোঁজ নেওয়া হয়নি। তবে যদি কেউ ওই কিশোরের খোঁজ নিতে আসেন কিংবা দাবি করেন তাহলে পূর্বের ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তার লাশ পরিবারের হেফাজতে দেওয়া হবে।
পুলিশ আরও জানায়, রবিউলের পরিবার থেকে যে মামলাটি করা হয়েছে তা হয়তো নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। যেহেতু এটি হত্যা মামলা ছিল এবং এখন রবিউলকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে তাই মামলাটি শেষ হয়ে যাবে।
সম্পাদক: ময়নুল হক পবন, প্রকাশক: রিয়াজুল হক রেজা, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মোহাম্মদ জয়নুল হক.
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়,কামাল প্লাজা (১ম তলা), কুলাউড়া, মৌলভীবাজার,ফোন: ০১৭১১-৯৮৩২৬৯
ঠিকানা: 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢 𝐈𝐧𝐯𝐞𝐬𝐭𝐦𝐞𝐧𝐭 𝐩𝐚𝐫𝐤 𝐃𝐈𝐏, 𝐀𝐥 𝐁𝐚𝐲𝐚𝐧 𝐁𝐮𝐢𝐥𝐝𝐢𝐧𝐠 𝟐𝟎𝟏𝟏, 𝐏.𝐎 𝟏𝟎𝟎𝟏𝟐𝟏- 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢. সংবাদ, ছবি ও বিজ্ঞাপন পাঠানোর ঠিকানা: Email: kulauradorpon@gmail.com ওয়েবসাইট: www.kulaurardarpan.com,
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত