স্টাফ রিপোর্টার। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসন এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর শহীদের একচেটিয়া দখলে থাকা এ আসনে এবার নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সক্রিয় হয়ে আওয়ামী লীগের বহু বছরের ‘দুর্গ’ ভাঙতে মাঠে নেমেছে।
জানা যায়, শ্রমিক অধ্যুষিত শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে গত তিন দশকে অনুষ্ঠিত প্রতিটি নির্বাচনে টানা জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের আব্দুর শহীদ। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হলে এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব দ্রুত কমতে শুরু করে। বিরোধী শিবির এখন এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শক্ত ঘাঁটি গড়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
মৌলভীবাজার-৪ আসনে বিএনপি ও জামায়াত ঐতিহ্যগতভাবে সক্রিয় থাকলেও এবার এনসিপির প্রীতম দাশ তরুণ ভোটারদের মাঝে বাড়তি জনপ্রিয়তা অর্জন করছেন। তার অতীতের সংগ্রাম ও নির্যাতনের ইতিহাস তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। ফলে এ আসনে ভোটের সমীকরণ এবার নতুন দিকে মোড় নিতে পারে।
এ আসনে রয়েছেন বিএনপির দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী। বিএনপির হয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে আছেন সাবেক দলীয় প্রার্থী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ মুজিবুর রহমান চৌধুরী ও সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. মহসিন মিয়া মধু। তাদের দাবি, অতীতে নানা ত্যাগ স্বীকারের পর এবার দল তাদের অবদান মূল্যায়ন করবে। এ আসনে জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা পেয়েছেন সিলেট মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মো. আব্দুর রব।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাবেক বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘নবম ও একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল দল। সূক্ষ্ম কারচুপির মাধ্যমে আমাকে হারানো হয়। আমার বিরুদ্ধে শতাধিক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। ২০১৪ সালে বিশেষ আইনে গ্রেপ্তার করে আমাকে ১৪ মাস জেলে রাখা হয়। এই সময় আমার ছোট ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান শামিম আহমেদ চৌধুরী মারা গেলেও জানাজায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। সবকিছুর পরও আমি দলের আদর্শ থেকে সরে যাইনি। এবারও দল আমার ত্যাগের মূল্যায়ন করবে বলে বিশ্বাস করি।’
আগামী নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. মহসিন মিয়া মধু বলেন, ‘২০০১ সালে আমি ধানের শীষের প্রার্থী ছিলাম। রাজনীতির ৫০ বছরের অভিজ্ঞতা আছে। বারবার জেল খেটেছি, তবুও জনসেবার কাজ চালিয়ে গেছি। মেয়র থাকা অবস্থায় গরিব ও অসহায়দের জন্য কম্বল বিতরণ, ইফতার আয়োজন, ত্রাণ বিতরণ করেছি। আমি মাঠে কাজ করছি এবং মানুষ আমাকে চায়।
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আব্দুর রব বলেন, ‘মানুষ পরিবর্তন চায়। বৈষম্যহীন সমাজ ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা চায়। জামায়াত অতীতে যেমন মানুষের পাশে ছিল, এবারও আমরা জনগণের সেবায় কাজ করব। বিশ্বাস করি, মানুষ এবার আমাদের ওপর আস্থা রাখবে।’
প্রীতম দাশ বলেন, আমরা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় লড়ছি। নির্যাতন, মামলা ও কারাবাস আমার মনোবল ভাঙতে পারেনি। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত পেলে মাঠে নেমে জনগণের সঙ্গে থেকেই নির্বাচন করব। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের বহু বছরের নিরাপদ ঘাঁটি মৌলভীবাজার-৪ আসন এবার বিরোধীদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার আসন হয়ে উঠেছে।
সম্পাদক: ময়নুল হক পবন, প্রকাশক: রিয়াজুল হক রেজা, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মোহাম্মদ জয়নুল হক.
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়,কামাল প্লাজা (১ম তলা), কুলাউড়া, মৌলভীবাজার,ফোন: ০১৭১১-৯৮৩২৬৯
ঠিকানা: 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢 𝐈𝐧𝐯𝐞𝐬𝐭𝐦𝐞𝐧𝐭 𝐩𝐚𝐫𝐤 𝐃𝐈𝐏, 𝐀𝐥 𝐁𝐚𝐲𝐚𝐧 𝐁𝐮𝐢𝐥𝐝𝐢𝐧𝐠 𝟐𝟎𝟏𝟏, 𝐏.𝐎 𝟏𝟎𝟎𝟏𝟐𝟏- 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢. সংবাদ, ছবি ও বিজ্ঞাপন পাঠানোর ঠিকানা: Email: kulauradorpon@gmail.com ওয়েবসাইট: www.kulaurardarpan.com,
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত