স্টাফ রিপোর্টার।। কুলাউড়ায় জব্দ করা ১৩ কোটি টাকা মূল্যের সেই বালু আইনি জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে নিলামকাজ সম্পন্ন করেছে উপজেলা প্রশাসন। ১৩ কোটি ৩৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকার সরকারি বালু প্রকাশ্য নিলামে বিক্রি হয়েছে ১৬ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার টাকায়।
উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতা ও গণমাধ্যমের ভূমিকার কারণে একটি বালুখেকো সিন্ডিকেটের কবল থেকে বড় ধরনের রাজস্ব জমা হবে সরকারের কোষাগারে। আজ রবিবার (৩১ আগস্ট) উপজেলা প্রশাসনের এ নিলামকাজ সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে স্থানীয় এলাকায় বালু নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের নিরসন হয়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকাল ১১টায় উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের সালন এলাকায় জব্দ করা এক কোটি ৬২ লাখ ১৩ হাজার ৬৮০ ঘনফুট বালু নিলাম করা হয়। ওই বালুর সরকারি মূল্য ধরা হয় সাত কোটি ২৯ লাখ ৬১ হাজার ৫৬০ টাকা। প্রকাশ্য নিলামে ওই বালু সর্বোচ্চ আট কোটি ১২ লাখ টাকা দিয়ে নিলামে নেন কুলাউড়ার পৃথিমপাশার দীপক দে।
দ্বিতীয় নিলামকারী হন সুনামগঞ্জের সৌরভ রায়।
দুপুর সাড়ে ১২টায় হাজীপুর ইউনিয়নের কনিমুড়া এলাকায় জব্দ করা ৭৯ হাজার ৫০ ঘনফুট বালুর নিলাম করা হয়। ওই বালুর সরকারি মূল্য ধরা হয় তিন লাখ ৫৫ হাজার ৭২৫ টাকা। সর্বোচ্চ ১১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় ওই বালু নিলামে নেন শ্রীমঙ্গলের মো. সেলিম মিয়া। দুপুর দেড়টায় হাজীপুর ইউনিয়নের হরিচক এলাকায় এক কোটি ২৯ লক্ষ ৮৬ হাজার ৯৩২ ঘনফুট বালু নিলাম করা হয়।
ওই বালুর সরকারি মূল্য ধরা হয় পাঁচ কোটি ৮৪ লাখ ৪১ হাজার ১৯৪ টাকা। সর্বোচ্চ আট কোটি টাকা দিয়ে ওই বালু নিলামে নেন সুনামগঞ্জের সৌরভ রায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নিলামকারী হন দীপক দে। দুপুর আড়াইটায় হাজীপুর ইউনিয়নের সাধনপুর এলাকায় তিন লাখ ৬১ হাজার ৫৩০ ঘনফুট বালু নিলাম দেওয়া হয়। ওই বালুর সরকারি মূল্য ধরা হয় ১৬ লাখ ২৬ হাজার ৮৮৫ টাকা।
সর্বোচ্চ ৭১ লাখ টাকা দিয়ে ওই বালু নিলামে নেন পৃথিমপাশার দীপক দে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কুলাউড়ার টিলাগাঁও ইউনিয়নের সালন, হাজীপুর ইউনিয়নের কনিমুড়া, হরিচক ও সাধনপুর নামক স্থানে উত্তোলনের মাধ্যমে মজুত করা দুই কোটি ৯৬ লাখ ৪১ হাজার ১৯২ ঘনফুট বালু জব্দ করা হয়, যার সরকারি মূল্য ধরা হয় ১৩ কোটি ৩৩ লাখ ৮৫ হাজার ৩৬৪ টাকা। গত ৬ আগস্ট মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখা থেকে স্পট নিলামের মাধ্যমে জব্দ করা বালু বিক্রি করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই বালু নিলামের জন্য গত ১৪ আগস্ট বিজ্ঞপ্তি দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন। কিন্তু ওই বালু নিজেদের মহালের দাবি করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বাসিন্দা মনু নদীর বালুমহালের বর্তমান ইজারাদার নাজমুন নাহার লিপি।
হাইকোর্টে সেই রিট নিষ্পত্তি না হওয়ায় বালু নিলাম কার্যক্রম স্থগিত করতে বালু মহালের ইজারাদারের পক্ষে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ও কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মোশতাক আহমেদ। এরপর গত ১৭ আগস্ট বালুর নিলামকাজ স্থগিতের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন। পরে আইনি জটিলতা নিরসন করে গত ২৭ আগস্ট বিকেলে ফের বালু নিলামের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এর আগে কালের কণ্ঠসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রশাসনের নির্দেশে বালুর স্তুপ চিহ্নিত করে গত জুলাই মাসের প্রথম দিকে কয়েক কোটি ঘনফুট বালু জব্দ করেন হাজীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মতিউর রহমান।
নিলাম চলাকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বালু নিলাম কমিটির আহ্বায়ক মো. মহিউদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনিসুল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী প্রীতম সিকদার জয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আল-আমিন সরকার ও জসিম উদ্দিন, হাজীপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল প্রমুখ।
সম্পাদক: ময়নুল হক পবন, প্রকাশক: রিয়াজুল হক রেজা, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মোহাম্মদ জয়নুল হক.
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়,কামাল প্লাজা (১ম তলা), কুলাউড়া, মৌলভীবাজার,ফোন: ০১৭১১-৯৮৩২৬৯
ঠিকানা: 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢 𝐈𝐧𝐯𝐞𝐬𝐭𝐦𝐞𝐧𝐭 𝐩𝐚𝐫𝐤 𝐃𝐈𝐏, 𝐀𝐥 𝐁𝐚𝐲𝐚𝐧 𝐁𝐮𝐢𝐥𝐝𝐢𝐧𝐠 𝟐𝟎𝟏𝟏, 𝐏.𝐎 𝟏𝟎𝟎𝟏𝟐𝟏- 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢. সংবাদ, ছবি ও বিজ্ঞাপন পাঠানোর ঠিকানা: Email: kulauradorpon@gmail.com ওয়েবসাইট: www.kulaurardarpan.com,
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত