স্টাফ রিপোর্টার। “হুজুরের হুজরা ঝাড়ু দেয়ার জন্য আমরা দুজনকে ডেকে পাঠান। এসময় মক্তবে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছিল। আমরা দু’জন হুজুরের হুজরা ঝাড়ু দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার সময় হুজুর আমাকে ডাক দিয়ে পুনরায় তার হুজরায় যেতে বলেন। আমি হুজরায় প্রবেশ করতেই হুজুর আমাকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরেন। এ সময় আমি হুজুরের কক্ষ থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে হুজুর খারাপ উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত বুলাতে থাকেন। তার খারাপ আচরণ দেখে আমি হতবাক হই এবং জোরপূর্বক সেখান থেকে বেরিয়ে আসি।:
কান্নাকাটি করে কথাগুলো বলেছিলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের একটি গ্রামের সমজিদের প্রাক্তন মক্তব শিক্ষার্থী (ইমরানা বেগম, ছদ্মনাম)। তার বর্তমান বয়স প্রায় ১৩/১৪ বছর। ইমরানা বেগম আরো জানায় ঘটনাটি ২০২২ সালের। তখন সে তার নানার বাড়ি থেকে মক্তবে পড়াশোনা করতো। তার উপর হুজুরের লোলুপ দৃষ্টি পড়ার পর ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানায়নি। বরং সে তার নানা বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে চলে যায়। ২০২২ সালে ওই মক্তব শিক্ষার্থী বয়স ছিল প্রায় ১০ বছর।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে সম্প্রতি যৌন নিপীড়নের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই অভিযুক্ত শরিফ উদ্দিন শরিফ পলাতক ছিলেন। অবশেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আউয়াল। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) শরিফ উদ্দিনকে ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ তরিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে শরিফ উদ্দিন নামের এক মৌলভী একটি কন্যা শিশুকে নিপীড়ন করতে দেখা যায়। ঘটনার পর থেকে পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্তকে শনাক্ত করে। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর থেকে অভিযুক্ত মৌলভী মো. শরিফ উদ্দিন শরিফকে গ্রেফতার করে। এই ঘটনায় তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।’
সূত্র জানায়, কানাইঘাট উপজেলায় সিঙ্গারীপাড় এলাকার মুহিবুর রহমানের ছেলে শরিফ উদ্দিন। বৈবাহিক জীবনে তিনি দুই স্ত্রীর স্বামী এবং দুই সন্তানের জনক।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অতীতে নারী সংক্রান্ত নানা অভিযোগের কারণে তাকে কোনো মসজিদ বা মাদ্রাসায় স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। পুলিশ জানায় এর আগে, মৌলভী মো. শরিফ উদ্দিন শরিফ মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
ঘটনার পর থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালায়। পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে কানাইঘাট উপজেলায় সিঙ্গারীপাড়ে অবস্থিত শরিফ উদ্দিনের বাড়িতে অভিযান চালায়। এরপর হরিপুর ও বালাগঞ্জে তার অবস্থান পাওয়া গেলেও অভিযান চালিয়েও তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, অভিযুক্ত মৌলভী শরিফ উদ্দিনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় ঘটনাটি ২০২২সালের এবং ঘটনাস্থল গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাওঁ ইউনিয়নের একটি মক্তবে। শরিফ উদ্দিন একটি জামেমসজিদে ছানী ইমামের দায়িত্ব পালন করতো।
অভিযুক্ত শরিফ উদ্দিনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই ও নন্দিরগাওঁ ইউনিয়ন পুলিশ বিট কর্মকর্তা দিদার আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও কন্যা শিশুর অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ করেন।
এ বিষয়ে মেয়ের পিতা বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার কথা রয়েছে।
সম্পাদক: ময়নুল হক পবন, প্রকাশক: রিয়াজুল হক রেজা, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মোহাম্মদ জয়নুল হক.
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়,কামাল প্লাজা (১ম তলা), কুলাউড়া, মৌলভীবাজার,ফোন: ০১৭১১-৯৮৩২৬৯
ঠিকানা: 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢 𝐈𝐧𝐯𝐞𝐬𝐭𝐦𝐞𝐧𝐭 𝐩𝐚𝐫𝐤 𝐃𝐈𝐏, 𝐀𝐥 𝐁𝐚𝐲𝐚𝐧 𝐁𝐮𝐢𝐥𝐝𝐢𝐧𝐠 𝟐𝟎𝟏𝟏, 𝐏.𝐎 𝟏𝟎𝟎𝟏𝟐𝟏- 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢. সংবাদ, ছবি ও বিজ্ঞাপন পাঠানোর ঠিকানা: Email: kulauradorpon@gmail.com ওয়েবসাইট: www.kulaurardarpan.com,
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত