এম এম শাহীন ভাই সালাম নিবেন। রাজনৈতিকভাবে আপনাকে নিয়ে কিছু লেখার ইচ্ছা কখনোই ছিলো না। আমার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা শাকিল চৌধুরীর ভিডিও সংযুক্ত একটি পোষ্টে, আপনার কমেন্টের আমি রিপ্লাই দিয়েছিলাম। যার প্রতি উত্তরে আপনি সাবেক সাংসদ সহ কয়েকটি বক্তব্যের অংশ বিশেষ ও অন্যান্য বিষয় সহ আমার কমেন্টের দীর্ঘ রিপ্লাই দিয়েছেন। তাই আমি রিপ্লাই দিতে এই লেখাটি।
প্রথমেই আপনার বর্ণাঢ্য ও চকচকে রাজনৈতিক জীবনের প্রতি সম্মান রেখে বলবো-আপনার ঐ রাজনৈতিক জীবনকে আপনি নিজেই ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন। বিশাল গ্যালনপূর্ণ বিশুদ্ধ দুধে কেরোসিন ঢেলে দেওয়ার মতো! বিএনপির শতশত নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বুকে ছুঁ ড়ি দিয়ে আঘাত করে, আপনি-ই হৃদয়হীনতার কাজ করেছেন!
সুলতান মনসুর সাহেব আপনার জনসভা-গাড়িতে হামলা করা প্রসঙ্গ গুলো নিয়ে লেখাটি লম্বা করতে চাই না। মনসুর সাহেবের বক্তব্যের যে অংশ, সেগুলো রাজনৈতিক বক্তব্য। প্রত্যেক দলই বিরুধী দল ও নেতাদের নিয়ে এমন বক্তব্য প্রদান করে থাকেন। এটি দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি হয়ে গেছে। যা বর্তমান ২০২৫ সালের প্রযুক্তিগত উন্নত যুগেও চলমান। যদিও এরুপ রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্যের সমর্থন করিনা এবং তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদ জানাই।
আপনি উল্লেখ করেছেন, বিএনপির আনুষ্ঠানিক কোন সদস্য ছিলেন না। কিন্তু, আবার বলছেন আপনার অনুমোদিত কাদিপুর ইউনিয়ন কমিটি ! যেটির সভাপতি ছিলেন, ক্যালিফোর্নিয়া বিএনপির সভাপতি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ফরেন অ্যাফেয়ার্স এডভাইজার কমিটি সদস্য বদরুল আলম চৌধুরী শিপলুর(আমার সম্পর্কে ভাগ্নে) পিতা মরহুম শওকত আলম চৌধুরী। বিষয়টি কেমন অসামন্জস্য-অস্বচ্ছতা হয়ে গেলো কি না ! ?
তাছাড়াও আমার জানা মতে, ভাগ্নে বদরুল আলম চৌধুরী শিপলুর পিতা এর পূর্বেও কাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ছিলেন। সম্ভবত তখন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিম চাচা ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ড.সাইফুল আলম চৌধুরী।
আপনি বলেছেন, ২০১৮ সালে ধানের শীষের প্রতীক সুলতান মনসুর নিয়ে গেছেন, তাই উনার প্রতীক কেনো আপনি নিতে পারবেন না !! এও বলেছেন-ঐসময় কোন হিসাব নিকাশ মাথায় কাজ করার কথা নয়!! হ্যা, ঐসময় আপনার মাথায় কাজ করেনি বলেই আপনার রাজনৈতিক বিজ্ঞতার পরিচয় তখন ফুটে উঠেনি!
কিন্তু আপনার উর্বর মস্তিষ্কে কি একটিবারও আসেনি যে-আপনি স্বতন্ত্র প্রার্থী সবার সমর্থনেই হয়েছিলেন এবং কুলাউড়া বিএনপির সকল নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী ও উপজেলার আপামর ভোটাররা নিজেদের সর্বোচ্চ উজাড় করে, ক্যাম্পিং করে এবং ভোট দিয়ে বিজয়ের মালা পড়িয়েছিলো।
আপনার অনবিজ্ঞতা বা অহংবোধ বা ইগো অথবা অন্য যে কোন কারনেই হউক, আপনি সেই মালা ছিঁড়ে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি, কুলাউড়ার ভোটারদেরও অপমান-অসম্মান করেছেন!
আপনার মনে আছে কি ? কিভাবে আপনাকে নিয়ে শুধু আমি আর আপনি(আমরা দুজন) মাগুরা, উত্তরবাজার, দক্ষিণ বাজর সহ বিভিন্ন বাসায় ভোটারদের সাথে আমি কথা বলে আপনাকে ওদের বাসায় নিয়ে গিয়েছিলাম। মনে থাকলে আছে, আর না থাকলেও এখন এগুলো কিচ্ছু আসে যায় না।
আমার মতো এরুপ শতাধিক নেতা কর্মী সমর্থক শুভানুধ্যায়ী তাদের পরিবার সহ আপনার জন্য কাজ করেছিলো। কিন্তু বিনিময়ে আপনি কুলাউড়াবাসীকে অমর্যাদা করেছেন !
আপনার কাছ থেকে জানার অপেক্ষায় রইলাম-আপনি কি নিজস্ব রাজনৈতিক বিচক্ষণতা, দক্ষতা দিয়ে, বিবেচনা করে নৌকা প্রতীক নিয়েছিলেন ? না কি কারো পরামর্শে ঐ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ?
পরবর্তীতে আবার পাট গামছা কি না কি ….!
যদি থার্ড পার্সন কারো পরামর্শ নিয়ে করে থাকেন তবে স্পষ্ট করে বলবো-তাদের চিনে রাখুন। তারা আপনার ক্ষমতার মোহের সুযোগ নিয়ে আপনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে চুনকালি মাখতে সেই পরামর্শ দিয়েছিলো ! নতুবা তারা ছিলো সম্পূর্ণ অপরিপক্ক, অদক্ষ, অযোগ্য, স্বার্থলোভী পরামর্শদাতা।
আপনি কুলাউড়া বিএনপির শতশত নেতাকর্মী সমর্থকদের ধোঁকা দিয়েছেন ! তারা অভিভাবক স্বরূপ সম্মান দিয়েছিলো। পাষাণের মতো তাদের সবাইকে সাগরে ভাসিয়ে স্বৈরাচারীদের সাথে আঁতাত করে মুজিব কোট গাঁয়ে দিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করলেন !! আবার পাট নিয়েও নির্বাচন করলেন ! এটা ধোঁকা নয়তো কি ?
আপনারতো স্বতন্ত্রে সুন্দর ⚽️ একটা প্রতীকও ছিলো। সে সময় সেটি মাথায় না আসাটাই কিংকর্তব্যবিমূঢ় বা আপনার রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিলো। আপনি যদি সেই সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী থেকে নির্বাচন করতেন, তখন বিজয়ী বা পরাজিত হলেও, আজও হয়তো আপনার মাথায় তাজ ঠিকই থাকতো। যা আপনি হারিয়ে ফেলেছেন! আর কখনো ফিরে পাবার সম্ভাবনা একেবারে নেই বললেও চলে।
যাক, আলহামদুলিল্লাহ। আপনি মধ্যসাগরে ফেলে আসা কুলাউড়া উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সংগ্রামী নেতা কর্মীরা অনেক সংগ্রাম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে, স্বৈরশাসকের ঘাত প্রতিঘাত মোকাবিলা ও সহ্য করে বর্তমানে নিজেরা পথ চলতে শিখে গেছে। একেকজন দক্ষ ক্যাপ্টেইন-নাবিকের ন্যায় সংগঠন পরিচালনা করছেন। স্বৈরাচারী সরকারের নির্যাতনকে শক্তিতে রুপান্তরিত করে, তারা আরো শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। অমানবিক নির্যাতন মামলা হামলার স্বীকার হয়েও, আপনার মতো তারা প্রাণপ্রিয় বিএনপি দলটি ত্যাগ করেনি। অন্য দলে না গিয়ে, দৃঢ় প্রত্যয়ে দলকে আগলে রেখে সামনে এগিয়ে নিতে বদ্ধ পরিকর কুলাউড়ার শতশত বিএনপির নেতাকর্মী।
তাই, কুলাউড়া উপজেলা বিএনপিতে নতুন কারো প্রয়োজন নেই। নতুন করে কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মী সমর্থক শুভানুধ্যায়ী সহ কুলাউড়ার সরল সহজ সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত না করার জন্য, বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে সম্মানপূর্বক উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
এমএম শাহীন ভাই, আসলে জানিনা আপনার রাজনৈতিক ডেস্টিনেশন কোথায় ? তবে, আপনার সাংবাদিকতা পেশা ও প্রতিষ্ঠানের আরো উত্তরোত্তর সাফল্য ও সমৃদ্ধি কামনা করছি। ভালো থাকবেন।
লেখক
শফিকুর জামান চৌধুরী
বিএনপি নেতা
সম্পাদক: ময়নুল হক পবন, প্রকাশক: রিয়াজুল হক রেজা, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মোহাম্মদ জয়নুল হক.
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়,কামাল প্লাজা (১ম তলা), কুলাউড়া, মৌলভীবাজার,ফোন: ০১৭১১-৯৮৩২৬৯
ঠিকানা: 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢 𝐈𝐧𝐯𝐞𝐬𝐭𝐦𝐞𝐧𝐭 𝐩𝐚𝐫𝐤 𝐃𝐈𝐏, 𝐀𝐥 𝐁𝐚𝐲𝐚𝐧 𝐁𝐮𝐢𝐥𝐝𝐢𝐧𝐠 𝟐𝟎𝟏𝟏, 𝐏.𝐎 𝟏𝟎𝟎𝟏𝟐𝟏- 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢. সংবাদ, ছবি ও বিজ্ঞাপন পাঠানোর ঠিকানা: Email: kulauradorpon@gmail.com ওয়েবসাইট: www.kulaurardarpan.com,
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত