স্টাফ রিপোর্টার। কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি বনের অধীনে থাকা ৭টি বাঁশ মহাল দীর্ঘ এক দশক ধরে ইজারা হয়নি। ফলে মহালের বাঁশ বনে পঁচে বিনষ্ট হচ্ছে, পাশাপাশি চোরাকারবারিদের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পাচার হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বাঁশ। এতে বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সঙ্গে যোগসাজশে পাচারকারীদের অবাধ দৌরাত্ম্য বেড়ে চলেছে। আর বছরের পর বছর সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
জানা যায়, রাজকান্দি বন রেঞ্জের অধীনে কুরমা, আদমপুর ও কামারছড়া বনবিট রয়েছে। এর মধ্যে আদমপুর ও কুরমা বনবিটে লাউয়াছড়া, চম্পারায়, বাঘাছড়া, ডালুয়াছড়া, কুরমাছড়া, সোনারাইছড়া ও সুনছড়া বাঁশ মহাল অবস্থিত। মহালগুলোতে প্রচুর বাঁশ থাকলেও গত এক দশক ধরে ইজারা দেওয়া হচ্ছে না। দর কমানোর অজুহাতে ইজারাদারদের সিন্ডিকেট দরপত্রে অংশ নিচ্ছে না। ফলে একদিকে মহালের বাঁশ অযত্নে নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে ট্রাক, পিকআপ, ঠেলাগাড়ি ও নদীপথে পাচার হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এসব পাচার হচ্ছে। অভিযোগ করলে তা ‘বাড়িঘরের বাঁশ’ বলে দায় এড়ানো হয়। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, শিগগির পদক্ষেপ না নিলে কয়েক বছরের মধ্যেই মহালগুলোতে বাঁশের অস্তিত্ব থাকবে না।
পরিবেশকর্মীরা বলছেন, একসময় বৈধভাবে ইজারা দিয়ে এসব বাঁশ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করা হতো। এখন মহালে পর্যাপ্ত বাঁশ না থাকায় এবং চুরি সহজ হওয়ায় কেউ ইজারা নিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন জেলা শাখার সভাপতি সালেহ সোহেল বলেন, চুরি করে বাঁশ বিক্রি করা সহজ হওয়ায় মহালদাররা আর দরপত্রে আসছেন না। এখনই শক্ত পদক্ষেপ না নিলে বাঁশ, বেত, গাছ এমনকি বনের প্রাণীও হারিয়ে যাবে।
এ বিষয়ে সিলেট বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ২০২৫-২৬ সালের জন্য গত ২০ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করা হলেও কোনো মহালদার তাতে সাড়া দেননি। পূর্বে প্রতিযোগিতামূলক দর হাঁকানোর পর ইজারা না নেওয়া, মামলা করে জটিলতা তৈরি এবং দরপত্রের চেয়ে ক্রয়মূল্য বেশি হয়ে যাওয়া—এসব কারণে মহাল ইজারা ব্যাহত হচ্ছে।
মৌলভীবাজার বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক নাজমুল আলম জানান, বিভিন্ন জটিলতার কারণে বাঁশ মহাল ইজারা দেওয়া যাচ্ছে না। মহালে কী পরিমাণ বাঁশ আছে তা পরিমাপ করছে ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বিভাগ। রিপোর্ট হাতে পেলেই যেসব মহাল ইজারা দেওয়া সম্ভব, সেগুলো দেওয়া হবে।
এদিকে সাবেক কয়েকজন ইজারাদার বলেন, বাঁশের বাজারমূল্য তুলনায় দরপত্রের মূল্য অনেক বেশি পড়ে যায়, তাই মহাল নেওয়া লোকসানের ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফলে দীর্ঘ এক দশক ধরে অনিয়ম, পাচার ও অযত্নে নষ্ট হচ্ছে কমলগঞ্জের বাঁশ মহাল, আর বঞ্চিত হচ্ছে সরকারি রাজস্ব।
সম্পাদক: ময়নুল হক পবন, প্রকাশক: রিয়াজুল হক রেজা, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মোহাম্মদ জয়নুল হক.
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়,কামাল প্লাজা (১ম তলা), কুলাউড়া, মৌলভীবাজার,ফোন: ০১৭১১-৯৮৩২৬৯
ঠিকানা: 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢 𝐈𝐧𝐯𝐞𝐬𝐭𝐦𝐞𝐧𝐭 𝐩𝐚𝐫𝐤 𝐃𝐈𝐏, 𝐀𝐥 𝐁𝐚𝐲𝐚𝐧 𝐁𝐮𝐢𝐥𝐝𝐢𝐧𝐠 𝟐𝟎𝟏𝟏, 𝐏.𝐎 𝟏𝟎𝟎𝟏𝟐𝟏- 𝐃𝐮𝐛𝐚𝐢. সংবাদ, ছবি ও বিজ্ঞাপন পাঠানোর ঠিকানা: Email: kulauradorpon@gmail.com ওয়েবসাইট: www.kulaurardarpan.com,
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত