✍️ স্টাফ রিপোর্টার | কুলাউড়ার দর্পণ
ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ফের বাংলাদেশ পুশইন করেছে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ভোরে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার সীমান্ত দিয়ে মোট ৭১ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে বড়লেখার পাল্লাথল সীমান্ত দিয়ে ৪৮ জন এবং শ্রীমঙ্গল দিয়ে ২৩ জনকে পুশইন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ৫২-বিজিবি ব্যাটালিয়ন।
বড়লেখায় আটক ৪৮ জন: নারী, পুরুষ, শিশুসহ
বড়লেখা উপজেলার পাল্লাথল চা-বাগান সংলগ্ন পাহাড়ি সীমান্ত এলাকায় ৫২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের টহলদল অভিযান চালিয়ে ৪৮ জন বাংলাদেশিকে আটক করে। বিজিবি জানায়, আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে ১৫ জন পুরুষ, ১৫ জন নারী এবং ১৮ জন শিশু।
তারা দীর্ঘদিন ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। কেউ ৬ মাস, আবার কেউ ১৭ বছর আগে যশোর ও কুড়িগ্রাম জেলার সীমান্ত দিয়ে ভারতে গিয়েছিলেন। চিকিৎসা, শ্রমিকের কাজ বা আত্মীয়ের মাধ্যমে সেখানে প্রবেশ করেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়।
বিএসএফের পুশইন — বিজিবির তৎপরতা
৫২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুল হক চৌধুরী বলেন,
“আটক ব্যক্তিরা যশোর, বাগেরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বরগুনা, বরিশাল ও কুড়িগ্রাম জেলার বাসিন্দা। তাদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে এবং যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একই দিন শ্রীমঙ্গল উপজেলার একটি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে আরও ২৩ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করা হয় বলে জানা গেছে।
জেলার মোট পুশইন ও আটক: ৪৫২ জন
বিজিবি সূত্রে পাওয়া তথ্যমতে, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তগুলো দিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৫২ জনকে পুশইন করে ভারতীয় বাহিনী। এর মধ্যে আটককৃতদের পরিসংখ্যান নিচে দেওয়া হলো:
বড়লেখা উপজেলা: ৩৪১ জন
জুড়ী উপজেলা: ১০ জন
কুলাউড়া উপজেলা: ২১ জন
শ্রীমঙ্গল উপজেলা: ১৯ জন
কমলগঞ্জ উপজেলা: ৬১ জন
এছাড়া আরও অনেকে সীমান্ত পেরিয়ে প্রবেশ করলেও বিজিবি বা স্থানীয় প্রশাসনের হাতে আটক হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সীমান্ত এলাকায় উদ্বেগ, কূটনৈতিক পদক্ষেপের দাবি
নিয়মিত পুশইনের ঘটনায় সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসকারী সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন,
“এই পুশইন কেবল একটি মানবিক সংকট নয়, বরং এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এর বিরুদ্ধে কঠোর কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে।”
–
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।