প্রথমেই বলবো-আবেগের বশবর্তি হয়ে যদি নেতৃত্ব নির্বাচন করেন তবে, সেই নেতৃত্বে দলের ভারসাম্য রক্ষা করা বড়ই কঠিন হয়ে পড়বে। বিবেক-বিবেচনা করে, প্রকৃতপক্ষেই দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ, ত্যাগী, পরিক্ষীত ব্যক্তিকেই নেতা নির্বাচন করতে হবে। যিনি কিনা, দলের সর্বোচ্চ ক্রান্তিলগ্নেও দলের সাথে কাঁঠালের আঠার মতো অংঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে থাকবেন। নিজ স্বার্থে দল ছেড়ে যাবেন না।
গত ১০-১৫ বছরের মধ্যে কুলাউড়া উপজেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনি, একেকজন একেকরকম কোয়ালিটি অর্জন সহ বিভিন্ন ভাবে ত্যাগ স্বীকার করে নিজেদেরকে নেতৃত্ব দানে যোগ্য করে তুলেছেন।
উল্লেখ্য যে- গত ২০১২ সালে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে কুলাউড়া উপজেলায় শক্তিশালী সুসংগঠিত সুযোগ্য বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। সেই কমিটি গঠনে অক্লান্ত পরিশ্রম মেধা দক্ষতা সময় ও অন্যান্য সহ সর্বোচ্চ অবদান যার ছিলো, উনার নাম না বললেই নয়। তিনি আর কেউ নন-শ্রদ্ধেয় এডভোকেট আবেদ রাজা। যার সম্পর্কে সকলেই অবগত।
আগামী মাস দেড়েকের মধ্যেই উপজেলা বিএনপির কমিটি নির্বাচন করার কথা রয়েছে।
কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির নেতৃত্ব নির্ধারণে-১৩ টি ইউনিয়নের ওয়ার্ড কমিটির নেতাকর্মী সহ সম্ভবত ৯২৩ টি ভোট রয়েছে।
১৩ টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটি ওয়ার্ড কমিটি সহ ৭১ সদস্য বিশিষ্ট ইউনিয়ন কমিটির প্রত্যেকেই ভোটার। তাদের প্রত্যক্ষ ভোটেই নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে।
মানব দেহের কারিগর, যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন তিনি সম্পূর্ণ শরীরকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে চলতে অত্যন্ত সুক্ষ ও শ্রেষ্ট ইন্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে সুচারুরুপে মেরুদন্ড নামক হাড় দিয়ে পুরো শরীরকে ফিক্সডআপ করেছেন। এই মেরুদন্ড বিকল বা ভেঙ্গে গেলে অথবা কোন চোটে বা আঘাতে মচকে গেলে স্বাভাবিক জীবন যাপন যে কতটা কঠিন ও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে তা ব্যাখ্যা করে, লেখাটি নিশ্চয়ই লম্বা করতে হবে না। ঠিক তেমনি ভাবে-একটি দল অথবা সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ মজবুত মেরুদন্ড হলো দায়িত্ব প্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক।
কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির আগামী কমিটির নেতৃত্ব নির্ধারণে যতটুকু জানা যায়, তিন জন প্রার্থী সাধারন সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
জনাব মোঃ বদরুজ্জামান সজল ভাই, শামীম আহমেদ চৌধুরী শামীম ভাই এবং আমার অনুজ সুফিয়ান আহমেদ। ব্যক্তিগত ভাবে তিনজনই আমার কাছে প্রিয় এবং যোগ্যতা সম্পন্ন নেতা। তিনজনের সাথেই ইন্ডিভিজুয়্যালি কথা হয়েছে।
বর্তমানে তারুণ্যের জয়জয়কার দেশ তথা বিশ্বজুড়ে। অভিজ্ঞ ও তারুন্যের সমন্বয়ে গঠিত যেকোন সংগঠনের গতিশীলতাও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।
অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত কয়েকটি কথায়, দলের প্রতি তাদের ভুমিকা অবদান ত্যাগের কথা উল্লেখ করছি।
মোঃ বদরুজ্জামান সজলঃ
তৃণমূলের থেকে বেড়ে উঠা উপজেলা বিএনপির পরিচিত রাজনীতিবিদ। ভরাট-বজ্র কন্ঠের বক্তৃতা দানে অত্যন্ত পারদর্শী একজন রাজনীতিবিদ। তিনি, ১৯৮১ সাল থেকে ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে অদ্যাবধি দলের সাথে মিশে আছেন। অনেককেই মানুষ অনেকভাবে চিনে জানে। কিন্তু বদরুজ্জামান সজল ভাইকে বিএনপির সজল বললেই চিনে। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে গত ২০১২ সালে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করেছেন। আগামীতেও তিনি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বলে জানা যায়। তিনি নির্বাচিত হলে দলকে ঐক্যবদ্ধ করে আরো শক্তিশালী ও গতিশীল করে এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে জানান।
শামীম আহমেদ চৌধুরীঃ
রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তিনি প্রথম জীবনে সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে রাজনীতিতে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। তিনিও দলের পৌরসভা থেকে উপজেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনিও আগামীতে সাধারন সম্পাদক প্রার্থী।
আবু সুফিয়ানঃ
ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে কলেজ ছাত্র রাজনীতির সভাপতি-সম্পাদকের মতো গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনিও ২০১২ সালে সর্ব কনিষ্ঠ নেতা হিসেবে ভোটের মাধ্যমে কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। কুলাউড়া উপজেলা বিএনপিকে আগামীতে নেতৃত্বদানে তিনি সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী।
এদের প্রত্যেকেরই বিভিন্নভাবে দলের প্রতি যথেষ্ট ত্যাগ ও অবদান এবং নেতৃত্বদানে যোগ্যতা থাকার পাশাপাশি অনুসারী ও নেতাকর্মী-সমর্থক রয়েছে।
আপনার ভোট আপনি দেবেন,
যাকে খুশি আপনি-ই দেবেন।
তবে, কাকে দেবেন বা বেছে নিতে পারেনঃ
অতীতে নেতাকর্মীদের প্রতি ব্যক্তিগত আচার আচরণ ও দলের প্রতি মোহ কার কেমন ছিলো(দল পাগল, নীতির পাগল নাকি, টাকার পাগল) অতীতে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কেমন ভূমিকা রেখেছিলেন। দাম্ভিকতা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন কিনা। সঠিক সময়ে শুদ্ধতা বিচক্ষণতা ও ন্যায় সঙ্গত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার দক্ষতা-বিজ্ঞতা রয়েছে কিনা।
এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে-যিনি ১টি পৌরসভা ও ১৩ টি ইউনিয়নের প্রত্যেক স্থরের নেতাকর্মীদের সবাইকে(রিপিট করছি) সবাইকে নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী সংগঠনে হিসাবে এগিয়ে নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যেতে পারবেন কিনা।
উপরোক্ত এরুপ আরো কিছু রাজনৈতিক গুণাবলি সম্পন্ন ব্যক্তিকে নেতা নির্বাচন করা যেতে পারে।
মনে রাখবেন, আপনার একটি ভোট একটি পবিত্র আমানত। সেটি কোন কিছুর বিনিময়ে নষ্ট হতে দিতে পারেন না। এতে আপনি নিজেই নষ্ট হলেন এবং দল ও দেশকে নষ্ট করলেন। এর দায় ও জবাব ইহকাল-পরকালেও কোন একদিন দিতে হবেই।
👉স্পষ্ট করে আরেকটি প্রসঙ্গ বলতে চাই-সারা দেশে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বিএনপির কিছু সংখ্যক নেতা-কর্মীরা, কেউ কেউ প্রত্যক্ষ আবার, কেউ কেউ পরোক্ষভাবে আওয়ামীলীগ দূসরদের দলে ভিড়িয়েছেন!
স্বাক্ষী প্রমাণ অনেকের কাছেই আছে। কিন্তু না, এগুলো কোন কিছু করতে যাওয়ার বা প্রমাণ উপস্থাপন করতে যাবোও না,এতো সময়ও নেই। শুধু বলবো-সাবধান হউন সতর্ক হউন, নতুবা আপনাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক ভবিষৎ অনিশ্চিত, জাষ্ট মাইন্ড ইট॥॥
পরিশেষে, কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির পৌরসভা ও ১৩ টি ইউনিয়নের প্রত্যেক স্থরের নেতাকর্মীরা, উপরোক্ত বিষয়গুলো সহ সঠিকভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে দলের নেতৃত্ব নির্ধারণ করবেন এবং ঐক্যবদ্ধ করে বিএনপিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এই প্রত্যাশা করি।
সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা এবং রইলো নিরন্তর শুভকামনা🌾
প্রবাস থেকে~
মোঃ শফিকুজ্জামান চৌধুরী(রিপন)
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।