1. kulauradorpon@gmail.com : কুলাউড়ার দর্পণ : কুলাউড়ার দর্পণ
  2. info@www.kulaurardarpan.com : কুলাউড়ার দর্পণ :
রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ০১:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সীমান্তে দুদফায় ১৬ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের অভিযোগে বরমচাল ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির বিতর্কিত কমিটি বাতিল কুলাউড়ার দৃষ্টিনন্দন সেতু পরিদর্শনে এড আবেদ রাজা সৈয়দ আবিদ হোসেন মাস্টারের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী ২৭ জুলাই  সিলেটে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চোরাই পণ্য জব্দ মাইলস্টোনে আমরা যাঁদেরকে হারালাম বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকালে ১১ বাংলাদেশী আটক জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কন্ঠে শপথ নিলেন কুলাউড়াবাসী কুলাউড়া- ব্রাহ্মণবাজার রোডের ডুলিপাড়ায় ভয়াবহ সংঘর্ষ, একজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নেই মাধ্যমিক এমপিও : তবুও এসএসসির ফলাফলে জুড়ী উপজেলায় সেরা সাফল্য

মণিপুরী শাড়ি: ইতিহাস বিকৃতি নয়, তথ্যের নির্ভুলতা চাই

  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

সম্প্রতি শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক জিআই (Geographical Indication) জার্নালে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ১৯১৯ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সিলেট সফরের সময়কেই মণিপুরী শাড়ির ব্যবহারকাল হিসেবে ধরা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট রৌশান আরার একটি স্ট্যাটাস থেকে প্রথম বিষয়টি নজরে আসে।

এর মাধ্যমে যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, তা শুধুমাত্র বিভ্রান্তিকর নয়, বরং এটি ইতিহাসের এক চরম বিকৃতি বলেই মনে করি। ইতোপূর্বে মণিপুরি শাড়ির আতুরঘর এবং সর্ববৃহৎ বানিজ্যিক উৎপাদন কেন্দ্র মৌলভীবাজারকে এর উৎসভূমি হিসেবে অন্তভূক্তি না করার যে প্রতিবাদ করেছিলাম তার কোন সুরাহা না করে মণিপুরি শাড়ির ইতিহাসে আরেক বিকৃতি সংযোজিত হলো।

ইতিহাসের অপলাপ ১৯১৯ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে মণিপুরী হস্তচালিত তাঁতের শিল্পের প্রশংসা করেছিলেন, তা নিঃসন্দেহে সত্য। কিন্তু সে সময়ে “মণিপুরী শাড়ি” নামে কোনো পোশাক বা পণ্যের অস্তিত্বেই ছিল না।

ঐতিহাসিক প্রমাণ অনুযায়ী, এই বিশেষ শাড়ির উদ্ভাবন ঘটে অনেক পরে—১৯৯২ সালে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুবিল, মাঝের গাঁও গ্রামের রাধাবতী দেবীর হাতে। তাঁর ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পে নারীর পরিধানের উপযোগী আধুনিক শাড়ি রূপ পেয়েছিল, যা পরবর্তীতে “মণিপুরী শাড়ি” নামে জাতীয় পর্যায়ে পরিচিতি লাভ করে। শিল্প বনাম পণ্য মণিপুরী বয়নশিল্প এক শতাব্দীর পুরনো, যেখানে ওড়না, ফানেক, গামছা, চাদর ইত্যাদি বস্ত্র ছিল প্রধান। অথচ “মণিপুরী শাড়ি” একটি স্বতন্ত্র ও আধুনিক ফ্যাশন-ভিত্তিক পণ্য। ঐতিহ্যের ছাপ থাকলেও এটি নতুন সৃষ্টির ফসল।অতএব, বয়নশিল্পের বয়সকে শাড়ির বয়স হিসেবে গণ্য করা অনৈতিহাসিক এবং মিথ্যা তথ্যপ্রচারের শামিল। জিআই দলিল মানে দায়িত্ব জিআই সনদ শুধু একটি পণ্যের নিবন্ধন নয়; এটি একটি জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অধিকার, উদ্ভাবনী কৃতিত্ব এবং ঐতিহ্যের আইনি স্বীকৃতি। তাই এমন একটি প্রক্রিয়ায় যথাযথ তথ্য যাচাই, প্রামাণ্য দলিল বিশ্লেষণ এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মতামত অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। ভুল তথ্য শুধু ইতিহাস বিকৃত করে না, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। কৃতিত্ব যার, স্বীকৃতিও তার মণিপুরী শাড়ির প্রকৃত উদ্ভাবক হিসেবে রাধাবতী দেবীর নাম আজ সর্বজনস্বীকৃত।

এই উদ্ভাবনকে “বৃহত্তর সিলেটের ঐতিহ্য” নামে উপস্থাপন করে স্থানীয়ের কৃতিত্বকে ঢেকে দেওয়া অনুচিত। বরং স্থানীয় ইতিহাস ও উদ্ভাবকদের সম্মান জানিয়ে তথ্য উপস্থাপন করাই উচিত। কী করণীয়? ১. শিল্প মন্ত্রণালয়কে জিআই জার্নালে সংশোধনী এনে সঠিক তথ্য যুক্ত করতে হবে। ২. জিআই প্রক্রিয়ায় একাডেমিক ও গবেষণাভিত্তিক যাচাই প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে। ৩. স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও গবেষকদের যুক্ত করে যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করতে হবে। শেষ কথা মণিপুরী শাড়ি এখন কেবল একটি পোশাক নয়—এটি একটি পরিচয়, এক নারীর উদ্ভাবনী কৃতিত্ব, একটি জাতিগোষ্ঠীর আত্মমর্যাদার প্রতীক। সেই ইতিহাসে ভুলচুক চলবে না। ইতিহাস নিয়ে যেন খেয়ালখুশিমতো নয়, দায়িত্বশীলতা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে আচরণ করা হয়—এই দাবি জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।

হাজী মো. আব্দুস সামাদ,লেখক ও গবেষক, abdusjuly@gmail.com

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।

ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট
error: Content is protected !!