স্টাফ রিপোর্টার।। কুলাউড়ার দর্পণ।।
মহান মুক্তিযোদ্ধের ছাত্র সংগঠক, শিক্ষানুরাগী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সৈয়দ আবিদ হোসেন মাস্টারের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী ২৭ জুলাই রবিবার।
২০২২ সালের ২৭ জুলাই নিজ বাড়িতে ৭২ বছর বয়সে সৈয়দ আবিদ হোসেন মৃত্যুবরণ করেন। ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে মরহুমের পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোরআন খতম, দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে কুলাউড়াস্থ পৃথিমপাশা তরফি সাহেব বাড়ী ও সদপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ।
লেখক, শিক্ষানুরাগী, সমাজকর্মী ও একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন সৈয়দ আবিদ হোসেন। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা নবাব আলী ছফদর খাঁন রাজা স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক, নবাব আলী সরওয়ার খাঁন ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়া হযরত ফাতেমা জনকল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, সৈয়দুন্নেছা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দি রাইজিং সান স্কুল প্রতিষ্ঠাকরণ এবং অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে ভূমিদান করেন। তিনি লংলা আধুনিক ডিগ্রী কলেজ ও আলী আমজদ উচ্চ বিদ্যালয় গভর্নিং বডির সম্মানিত সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করেন একাধিকবার।
সৈয়দ সালাউদ্দিন হোসেনের জ্যোষ্ঠ্যপুত্র সৈয়দ আবিদ হোসেন ১৯৫০ সালের ১৫ই জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। সৈয়দ আবিদ হোসেন পৃথিমপাশার সদপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ শেষে আলী আমজদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক এবং সিলেট শহরের মদন মোহন কলেজ থেকে আই.এ পাশ করেন ১৯৭০ সালে। পরবর্তীতে বি.এ তে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি মদন মোহন কলেজে মাওলানা আব্দুল হামিদ খাঁন ভাসানী (পিকিং ন্যাপ) ছাত্র সংগঠন বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হন। মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ভাসানী ন্যাপের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ও পৃথিমপাশা নবাব বাড়ির বাসিন্দা নবাব আলী ছফদর খাঁনের (রাজা) সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের লক্ষে ভারতের ত্রিপুরার কৈলা শহরে চলে যান। এসময় দীর্ঘ নয় মাস ভারতে থেকে তিনি মুক্তিযুদ্ধে একজন ছাত্র সংগঠক হিসেবে কৈলা শহর মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পের অফিস পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। কৈলা শহর মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পের নেতৃত্বে ছিলেন মহান মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক নবাব আলী ছফদর খাঁন (রাজা), ক্যাপ্টেন হামিদ সিং, মানিক চৌধুরী, মিহির চৌধুরী, মুহিত পাল, কেতকি চৌধুরী, ক্যাপ্টেন দাশগুপ্ত, কৈলাশ শহরের সিএমপিএল সেক্রেটারি বৈদ্যনাথ মজুমদার, রাঙাউটির বাসিন্দা সালেহ চৌধুরী প্রমুখ।
দেশ স্বাধীনের পরবর্তী সময়ে ভাসানী ন্যাপের কেন্দ্রীয় নেতা রাজা নবাব আলী ছফদর খাঁন, সৈয়দ আবিদ হোসেনসহ অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের রাষ্ট্রীয় সনদ নেননি। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তিনি স্টেট ব্যাংকের এলডিসি পদে কিছুদিন সরকারি চাকরি করার পর পৃথিমপাশার সদপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করে ২০০৯ সালে মনসুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। সৈয়দ আবিদ হোসেনের চার ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। জ্যোষ্ঠ্যপুত্র সৈয়দ আশফাক হোসেন (তানভীর) সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত রয়েছেন কুলাউড়া উপজেলায়।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।