
স্টাফ রিপোর্টার।। জুড়ী উপজেলা শহরের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে দেশের বৃহৎ হাওর হাকালুকিতে মিলিত হয়েছে জুড়ী নদী। শহরের ঐতিহ্যবাহী ভবানীগঞ্জ ও কামিনীগঞ্জ বাজার দুটি জুড়ি নদীর তীরে অবস্থিত। বাজার দুটির ময়লা-আবর্জনায় ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে নদী।
ব্রিটিশ শাসনামলে স্থাপিত ভবানীগঞ্জ ও কামিনীগঞ্জ বাজারের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছে শহরের শিশুপার্ক সেতু। এই সেতু থেকে নিয়মিত ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে জুড়ী নদীতে। পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর বর্জ্য পদার্থও নদীতে ফেলা হচ্ছে। এসব বর্জ্য শেষ পর্যন্ত হাকালুকি হাওরে গিয়ে পড়ছে। এতে হুমকির মুখে পড়ছে হাওরাঞ্চলের মূল্যবান জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ। উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির নিয়মিত সভায় বারবার এ ব্যাপারে কথা বলা হলেও নির্বিকার প্রশাসন।
ভবানীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, জুড়ী শহরে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কোনো নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় মানুষ বাধ্য হয়ে নদীতে এসব ফেলে। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে জুড়ীতে ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
কামিনীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আম্বিয়া বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের কাছে বারবার আমরা ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণের দাবি জানিয়েছি। প্রশাসন এ বিষয়ে এখনও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি।’
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও নদীতে দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দ্রুত পরিবেশ রক্ষা করা অপরিহার্য।’
উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শিক্ষাবিদ মো. তাজুল ইসলাম জানান, বিষয়টি বারবার প্রশাসনের নজরে আনা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। নদীতে ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্য পদার্থ ফেলার কারণে দেশের বৃহৎ হাওর হাকালুকিতে মিঠাপানির মাছ বিলুপ্তির পথে।
উপজেলা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মাছুম রেজা বলেন, জনপ্রতিনিধিরা দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন সভায় কথা বলে আসছেন। প্রশাসনের ভাষ্য, শহরের আশেপাশে খালি জায়গা না থাকায় ময়লা ফেলার জন্য ডাম্পিং স্টেশনের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সমরজিৎ সিংহ বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর মালিকদের নিয়ে এক সভায় তাদের নদীতে বর্জ্য পদার্থ না ফেলার বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তারা একটি প্রতিবেদন তৈরি করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছেন।
ইউএনও বাবলু সূত্রধর বলেন, শহরের নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় মানুষ জুড়ী নদীসহ যত্রতত্র ময়লা ফেলছে। শিগগিরই ডাম্পিং স্টেশনের স্থান নির্ধারণের চেষ্টা করবেন তিনি।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।