1. kulauradorpon@gmail.com : কুলাউড়ার দর্পণ : কুলাউড়ার দর্পণ
  2. info@www.kulaurardarpan.com : কুলাউড়ার দর্পণ :
রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০২:১৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সুনামগঞ্জে নৌকাসহ ৩০ লাখ টাকার ভারতীয় গরু জব্দ মৌলভীবাজারে বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ১ নাদেলের বিরুদ্ধে তারেক রহমানকে নিয়ে কটুক্তির অভিযোগ, বিএনপি নেতাদের নিন্দা লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে নারীর মৃত্যু কুলাউড়ায় পৃথিমপাশা বিএনপির কাউন্সিল সম্পন্ন, পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার ভোটের সিস্টেমটি নষ্ট করে দিয়েছে-ময়ূন! পৃথিমপাশা ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃত্বে ফের বুরহান উদ্দিন ময়েজ,সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত এডভোকেট আহমেদ উর রহমান মুরাদ কুলাউড়ার – জুড়ী ৪৪ বছরেও মাটির নিচেই পড়ে আছে ইউরেনিয়াম! রবিরবাজারে রাস্তার পাশে বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষণ: দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি স্থানীয়দের জামায়াতের আমিরের রোগমুক্তি কামনায় বিএনপি নেতা এডভোকেট আবেদ রাজা নিউ ইয়র্কে নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামের স্মরণে সড়কের নামকরণের দাবি — এড. আবেদ রাজা

হাকালুকি হাওরে চার লাখ টাকার নিষিদ্ধ জাল ধ্বংস, একজনকে জরিমানা

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫
  • ২৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক | কুলাউড়ার দর্পণ।

দেশের বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি হাকালুকি হাওরে পানি কমতে শুরু করতেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অবৈধ মৎস্য শিকারিরা। সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাওরের বিভিন্ন বিলে বেড় জাল, কারেন্ট জালসহ নিষিদ্ধ জাল পেতে পোনা মাছ নিধনের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এসব মাছ ভোররাতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করা হচ্ছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে হাওরের জীববৈচিত্র্য, জলজ উদ্ভিদ ও মাছের প্রজনন।

বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ জাল জব্দ ও ধ্বংস

(৮ জুলাই)  কুলাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহ জহুরুল হোসেনের নেতৃত্বে হাওরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় প্রায় ৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল, ৩০০টি চায়না দোয়ারী জাল, এবং ৬ হাজারটি চাই জাল জব্দ করে হাওরের তীরে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। জব্দ করা জালের বাজারমূল্য প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকা।

অভিযানে কুঞ্জ লাল বিশ্বাস নামের একজনকে অবৈধভাবে মাছ ধরার দায়ে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করে তা আদায় করা হয়। অভিযানে অংশ নেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবু মাসুদ, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা সোনা মোহন বিশ্বাস এবং কুলাউড়া থানার পুলিশ সদস্যরা।

পুর্বের অভিযান ও লিখিত অভিযোগ

এর আগে, গত ১৮ জুন ও ২২ সেপ্টেম্বর একইভাবে হাওরের কুলাউড়া অংশে অভিযান চালিয়ে ১ হাজার মিটার জাল জব্দ করে বিনষ্ট করা হয়েছিল। হাওরের ‘চকিয়া বিল গ্রুপ (বদ্ধ)’ জলমহালের ইজারাদার অ্যাডভোকেট মো. মাসুক মিয়া জানান, সাদিপুর গ্রামের বারিক মিয়া, ফয়ছল মিয়া, শিমুল মিয়া, দুলাল মিয়া, পারুল মিয়া ও তাদের সহযোগীরা অবৈধভাবে জলমহালে বেড় জাল দিয়ে পোনা ও মা মাছ শিকার করছে।

তিনি এ বিষয়ে ২৯ জুন বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছের প্রজাতি

দুই দশক আগেও হাকালুকি হাওরে ১১০ প্রজাতির দেশি মাছ পাওয়া যেত। বর্তমানে তা কমে ৫০ প্রজাতির নিচে নেমে এসেছে। প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে মাগুর, রিটা, নানিদ, বাঘাইড়, চিতল, রানী, এলংসহ মূল্যবান প্রজাতিগুলো। অথচ হাওরের মাছের স্বাদ, গুণগত মান ও প্রাচুর্য দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও ছিল পরিচিত। কিন্তু লাগামহীন শিকার এবং উন্নয়ন প্রকল্পের অভাবে আজ হাওরের প্রাণ হারাতে বসেছে।

উন্নয়নের নামে ভাসা প্রকল্প, বাস্তব উন্নয়ন নেই

১৯৯৯ সালে হাকালুকি হাওরকে ‘ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া (ইসিএ)’ ঘোষণা করা হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো বাস্তব ও কার্যকর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ হয়নি। পরিবেশ অধিদপ্তর এবং কিছু বেসরকারি সংস্থা কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও হাওরের বা হাওর তীরের মানুষের কোনো স্থায়ী উন্নয়ন হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

পরিবেশ রক্ষায় অভয়াশ্রমের দাবি।

পরিবেশকর্মী মো. মছব্বির আলী ও খোরশেদ আলম বলেন, “নিষিদ্ধ জালে মা মাছ ও পোনা মাছ ধরা বন্ধ না হলে হাওরের মৎস্যসম্পদ ধ্বংস হয়ে যাবে। এখনই হাওরের অন্তত কিছু অংশে স্থায়ী অভয়াশ্রম গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে।”

প্রশাসনের বক্তব্য ও আশ্বাস।

কুলাউড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবু মাসুদ বলেন, “পোনা মাছ রক্ষায় আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। এখন পর্যন্ত ১২ হাজার মিটারের বেশি নিষিদ্ধ জাল জব্দ করে পোড়ানো হয়েছে। কিন্তু শুধু আইনি পদক্ষেপ নয়, স্থানীয়দের সচেতনতাই এ বিষয়ে মূল চাবিকাঠি।”

সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন বলেন, “একাধিকবার অভিযান চালিয়েও স্থায়ী সমাধান আসছে না। স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি না হলে হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষা কঠিন হবে। প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, “হাওরের পরিবেশ রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। বর্তমানে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ইবিএ প্রকল্প কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় চলমান রয়েছে। হাওর উন্নয়ন ও জনদাবির বিষয়টি আমরা পরবর্তী ইসিএ কমিটির সভায় তুলে ধরবো এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।”

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।

ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট
error: Content is protected !!