সিলেট ব্যুরো।।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়ার মতো জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সহায়তার কর্মসূচির আওতায় প্রথম ধাপে ১০০ জন রোগীকে চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে চেক হস্তান্তর করা হয়।
🎤 প্রধান অতিথির বক্তব্য:
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল উমর রাশেদ মুনির। তিনি বলেন,
“এই কর্মসূচির মাধ্যমে মোট ৫০০ জন রোগীকে আড়াই কোটি টাকা বিতরণ করা হবে। ইতিমধ্যে ৩৫০ জন রোগীর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে এবং ধারাবাহিকভাবে তাদের চেক প্রদান শুরু হয়েছে। বাকি ১৫০ জনের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া চলমান।”
📊 সমাজসেবা দপ্তরের তথ্য:
সিলেট জেলা সমাজসেবা অফিসের উপপরিচালক মোঃ আব্দুর রফিক জানান,
“সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহায়তা কর্মসূচিতে সিলেটে এখন পর্যন্ত ৪,৯৬৯ জনের চেক শতভাগ বিতরণ করা হয়েছে। এই ছয়টি জটিল রোগে আক্রান্তরা চিকিৎসা ব্যয়ে নিঃস্ব হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। পঞ্চাশ হাজার টাকার এই সহায়তা তাদের জন্য আশার আলো ও ভরসা।”
👥 উপস্থিত ব্যক্তিরা:
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহবুবুল আলম।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন:
অধ্যাপক ডা. জামিলা খাতুন (গাইনোকলজি এন্ড অবস্টেট্রিকস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান)
অধ্যাপক ধ্রুব দাস (নেফ্রলজি বিভাগ)
অধ্যাপক মুখলেসুর রহমান (কার্ডিওলজি বিভাগ)
সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা নাইম (নাক-কান-গলা ও হেড-নেক বিশেষজ্ঞ)
সহকারী অধ্যাপক ডা. ধ্রুব দাশ
উপপরিচালক মো: আব্দুর রকিব (সমাজসেবা অফিস)
সমাজসেবা অফিসার জাহানারা বেগম
সকলেই এই উদ্যোগকে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা সংগ্রামে একটি সময়োপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন।
🧬 তথ্য জানুন: লিভার সিরোসিস ও থ্যালাসেমিয়া
লিভার সিরোসিস:
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, লিভারের রোগের বিভিন্ন ধাপে কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় এবং লিভার তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারায়। এই চূড়ান্ত অবস্থাটিকেই লিভার সিরোসিস বলা হয়।
থ্যালাসেমিয়া:
এটি একটি জেনেটিক রক্তের রোগ, যার ফলে শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে যায়। প্রধান লক্ষণ হলো রক্তস্বল্পতা, দুর্বলতা, ফ্যাকাশে ত্বক, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। কিছু ক্ষেত্রে প্লীহা বড় হয়ে যায়, হাড়ে পরিবর্তন আসে, এবং অতিরিক্ত আয়রন শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে জমা হয়ে ক্ষতি করতে পারে।
পরিবারগুলোর বাস্তব অভিজ্ঞতা:
জটিল রোগে আক্রান্ত একজন রোগী মানে শুধু একজন নয় — পুরো পরিবারের মানসিক, শারীরিক ও আর্থিক যন্ত্রণা।
অনেক সময় পরিবারকে শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে চিকিৎসার খরচ জোগাতে হয়। কেউ কেউ সাহায্য করে, আবার অনেকে সাহায্য চাইলে বিরক্ত হন। রোগীর পাশে দাঁড়াতে গিয়ে পরিবারের আহার-নিদ্রাও বিপন্ন হয়ে পড়ে।
“শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করেও আপনজনকে রোগমুক্ত করতে চেষ্টা করে সকলেই প্রাণপণে।”
🏛️ সরকারের মহতী উদ্যোগ:
এই জটিল রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা সহায়তা সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটি মানবিক পদক্ষেপ। দীর্ঘদিন ধরে এই কর্মসূচি চলমান থাকলেও সচেতন মহল দাবি তুলেছেন,
“সহায়তার আগে যেন সঠিক যাচাই-বাছাই হয় এবং প্রকৃত অসহায়রাই এর সুফল পান।”
এমন সহায়তা যদি ধারাবাহিকভাবে ও আরও বিস্তৃতভাবে চালু রাখা যায়, তবে হাজারো পরিবার পাবে নতুন আশার আলো।
📨 ই-মেইল: kulauradorpon@gmail.com | 🌐 ওয়েব: www.kulaurardarpan.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।