স্টাফ রিপোর্টার।।
কুলাউড়ায় এক মসজিদের ইমামের মালিকানাধীন ৩ একর জমি দখলে নিতে প্রভাবশালী এখলাছুর রহমান নামক এক ব্যক্তি আদালতে ২৮ টি হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেছেন । ২৮ টি মামলার মধ্যে ২৭ টি মামলা ইতিমধ্যে মিথ্যে প্রমানিত হয়েছে। মামলায় হেরেও ক্ষান্ত হননি প্রভাবশালী উক্ত ব্যাক্তি। তিনি বিভিন্নভাবে বল প্রয়োগ করে ইমামের জমির ফসলি জমি কেটে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। এসব বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগীতা চেয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে মামলা জর্জরিত ইমাম মাওলানা আব্দুল বাছিত এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইমাম আব্দুল বাছিত জানান, তাঁর পৈতিক প্রায় ৩ একর জমি জবর দখল করতে পাশ্ববর্তী গ্রামের এখলাছুর রহমান নানা জাল দলিল,জাল ফরসা সৃষ্টি করে বিভিন্ন সময় আদালতে স্বত্ব মামলা ,ফৌজদারী মামলা দায়ের করেন। গত ১২ বছরে তিনি ২৮ টি মামলা করেন আদালতে। মামলা মোকাবেলা করতে গিয়ে ইমাম আব্দুল বাছিত এখন বসে বসার উপক্রম হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে ২৮ টি মামলা থেকে ২৭ টি মামলা মিথ্যা ও ভুয়া প্রমানিত হওয়ায় আদালত মামলাগুলি থেকে ইমাম আং বাছিতকে অব্যাহতি প্রদান করেন। কিন্তু চতুর এখলাছুর রহমান আদালতে মামলায় হেরে স্থানীয়ভাবে বল প্রয়োগ করে দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টি করে ইমামের মালিকানাধীন জমি জবর দখল করতে নানা অপকৌশল অবলম্বন করায় পঞ্চায়েতের বেশীরভাগ মুরব্বি শনিবার একত্রিত হয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনের কাছে এর বিচার প্রার্থনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইমাম হাফিজ মাওলানা আব্দুল বাছিত আরও জানান, একই (সঞ্জবপুর) গ্রামের প্রভাবশালী এখলাছুর রহমান নামক ব্যক্তি সঞ্জবপুর মৌজার পুরাতন জেএল নং ১৪০, খতিয়ান নং ০৯ দাগ নং ৮২৬, ৮৩১, ৮৪০, ৮৪৩, ৮৪৪, ৮৫০, ৮৫৫, ৮৬৩, ৮৬৫, ৮৬৭, ৮৬৮ নং দাগের ২ একর ৬৩ শতক জমি দখল করতে ২০১২ সাল থেকে একের পর মিথ্যা মামলা দায়ের করতে থাকেন। মোট ২৮টি মামলা দায়ের করেন আদালতে। যার মধ্যে ২৭টি মামলা ইতোমধ্যে খারিজ হয়েছে এবং একটি মামলা চলমান আছে। জাল দলিলে মামলা করার কারণেই মুলত মামলাগুলো আদালতে খারিজ হয়ে যায়। বর্তমানে যে মামলাটি চলমান আছে তাও খারিজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই এখলাছুর রহমান ১৯৯৮ সালে সঞ্জবপুর (বেলুলির পার) মসজিদের জমির জাল দলিল ও আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তির জাল দলিল ব্যাংকে জমা দিয়ে সোনালী ব্যাংক কুলাউড়া শাখা থেকে গরু মোটাতাজাকরণের জন্য ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ঋণ নেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পেরে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক চেক জালিয়াতির মামলা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সঞ্জবপুর (বেলুলির পার) মসজিদ কমিটির সভাপতি আকবর আলী, সেক্রেটারি সৈয়দ কামাল হোসেন, সৈয়দ ইয়াজিদ আলী, ছবির মিয়া, গিয়াস উদ্দিন, তোলা মিয়া, হাজি মো: ছৈদ আলী, মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল জলিল, হাজী মাসুক মিয়া, হাজী ছুরুক আলী, মো: আব্দুছ ছবুর, অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য নবুয়ত আলী, কবির আহমদ ও মহব্বত মিয়াসহ অর্ধশতাধিক মুসল্লি উপস্থিত প্রমুখ।
সঞ্জবপুর (বেলুলির পার) মসজিদ কমিটির সভাপতি আকবর আলী, সেক্রেটারি সৈয়দ কামাল হোসেন জানান, দীর্ঘদিন থেকে এই এখলাছুর রহমান মামলা দিয়ে হাফিজ মাওলানা আব্দুল বাছিতকে হয়রানি করছেন। এলাকার মানুষ বিষয়টি অবগত আছেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত এখলাছুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ফোনে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।