স্টাফ রিপোর্টার।।
কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের পাঁচপীর জালাই এলাকায় শ্রী শ্রী গোপাল জিউ আখড়ার জমি নিয়ে সনাতনী দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৩জুলাই) দুপুরে এই ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণসহ প্রায় দুই শতাধিক মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হন।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন, আখড়া পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি সনাতন উরাং, দিপক উরাং, মিলন উরাং, এবং অপর পক্ষের সনজিত গোয়ালা ও তার স্ত্রী ফালগুনি বুনার্জী। আহত সকলেই চিকিৎসাধীন আছেন।
আখড়া পরিচালনা কমিটির সম্পাদক সত্যবান উরাং জানান, শ্রী শ্রী গোপাল জিউ আখড়ার জমিজমা দেখাশোনা করার জন্য কমিটির পক্ষ থেকে মঙ্গল খাড়িয়াকে রাখা হয়। মঙ্গল খাড়িয়া তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে আখড়ার জমিতে একটি কাঁচা ঘরে বসবাস করতেন।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকালে সনজিত গোয়ালা তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে মঙ্গল খাড়িয়াকে হুমকিধামকি দিয়ে ঘর থেকে বিদায় করে নিজে সেই ঘরে ওঠেন।
এদিকে মঙ্গল খাড়িয়া বিষয়টি আখড়া কমিটির লোকজনকে জানালে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে অবহিত করেন। অন্যান্য দিনের মতো বুধবার সকালে আখড়া পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি সনাতন উরাং ৩-৪ জন শ্রমিক নিয়ে বনজঙ্গল পরিস্কারের জন্য আখড়ার টিলায় যান। এসময় তারা মঙ্গলের ঘরে সনজিতকে দেখে এখানে সে কি করছে জিজ্ঞেস করলে তিনি উগ্র কথাবার্তা শুরু করেন। এ নিয়ে বাকবিতন্ডায় দুই পক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
সংঘর্ষের খবরটি ছড়িয়ে পড়লে পাঁচপীর জালাই ও ক্লিভডন এলাকার সনাতনী লোকজনসহ প্রায় দুই শতাধিক মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হন। একে একে ছুটে আসেন জয়চন্ডী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ কমরু, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিলন বৈদ্য, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আতিকুর রহমান ইমরান, স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য মো: মনু মিয়া, ৫নং ওয়ার্ড সদস্য শংকর উরাংসহ অনেকেই।
এ ঘটনায় সঞ্জিত গোয়ালা, ফালগুনি বুনার্জী, দিপক গোয়ালা, শংকর গোয়ালা, আবু গোয়ালা, সাধন গোয়ালা, রিপন মিয়া ও আব্দুল মালেক এর নাম উল্লেখ করে কুলাউড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আখড়া পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি সনাতন উরাং।
জমির দাবিদার সঞ্জিত গোয়ালা বলেন, আখড়ার এই বাড়িতে তার বাবা ও দাদা বসবাস করে গেছেন। সেই সুবাদে তিনিও বসবাস করেছেন। কিছুদিন তিনি অন্য বাগানে ছিলেন, এখন আবার এসেছেন, কিন্তু আখড়ার লোকজন তাকে ও তার স্ত্রীকে মারপিট করে তাড়িয়ে দিচ্ছেন। তিনি কাউকে মারধর করেন নি। তবে এই জায়গার মালিকানা কোন কাগজপত্র তার কাছে নেই।
জয়চন্ডী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ কমরু এবং স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য মো: মনু মিয়া বলেন, এই পুরো জায়গাটি গোপাল জিউ আখড়ার। দেখাশোনার দায়িত্বে আখড়ার নির্ধারিত লোকজনও ছিলো। কিন্তু একটি কুচক্রী মহলের ইন্দনে সঞ্জিত জোরপূর্বক এখানে বসতে চেয়েছিলেন। এলাকায় আরও বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্য ছিল তার।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওমর ফারুক জানান, আখড়ার ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।