
হঠাৎ চোখের সামনে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে গেলে—যেমন ভয়ানক আগুন, রক্তাক্ত আঘাত, দুঃসহ চিৎকার, অথবা কাউকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে দেখা—অনেকে স্বাভাবিকভাবে মোবাইল তুলে ভিডিও করেন। কেউ হয়তো করেন প্রমাণ হিসেবে, কেউ সচেতনতা গড়তে বা পুলিশকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে।
কিন্তু এরপর কী হয়? সেই রক্তাক্ত, বিভৎস ভিডিওগুলো অচেতনভাবেই আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে ফেলি। কোনো সতর্কবার্তা ছাড়াই!
এতে হয়তো কেউ প্রশংসা করেন আপনার ‘সাহসের’, কিন্তু আমরা ভুলে যাই—এই দৃশ্য অনেকের মনের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। কেউ কেউ এমন দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, ঘুমের মধ্যে কেঁপে ওঠেন, ভয়ংকর স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে তাদের মনে গেঁথে বসে ভয়, উদ্বেগ, বিষণ্ণতা। চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে বলে Post-Traumatic Stress Disorder (PTSD)—এক ধরনের মানসিক আঘাত যা জীবনের স্বাভাবিকতা ধ্বংস করে দিতে পারে।
সবচেয়ে বিপদে পড়ে কোমলমতি শিশু-কিশোররা। আমার চেম্বারে অনেক শিশুকে দেখেছি যারা শুধু ভয়ংকর ভিডিও দেখেই মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাই দয়া করে, ভিডিও পোস্ট করার আগে একবার ভাবুন—এটি কারো জন্য ট্রমার কারণ হয়ে উঠবে না তো? আপনার এক ক্লিক হয়তো কাউকে ঠেলে দিতে পারে আতঙ্কের অন্ধকারে।
বেখেয়ালে পোস্ট নয়, সচেতন হোন ভিডিও শেয়ার করতে গিয়ে।
ডা. মু. সাঈদ এনাম
(এসোসিয়েট প্রফেসর,স্নায়ু ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ)
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।