স্টাফ রিপোর্টার || কুলাউড়ার দর্পণ
কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল রেলস্টেশন সংলগ্ন একটি ডোবা থেকে অজ্ঞাত এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে কুলাউড়া থানা পুলিশ। পরে তা সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার নিখোঁজ কিশোর রবিউল ইসলাম নাঈম (১৪) হিসেবে শনাক্ত হয়। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক হোটেল মালিককে আটক করেছে পুলিশ।
জানা যায়, গতকাল রবিবার (৩ আগস্ট) স্থানীয় বাসিন্দারা রেলস্টেশন সংলগ্ন ডোবায় একটি মরদেহ দেখতে পেয়ে কুলাউড়া থানা পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত কিশোর নাঈম ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের গদিয়ারচর গ্রামের কনা মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে (বগুড়া রেস্টুরেন্ট, সুপ্রিম ফিলিং স্টেশনের মালিকানাধীন) নাইট শিফটে কাজ করত। গত ২৬ জুলাই থেকে সে নিখোঁজ ছিল।
নাঈমের পরিবারের অভিযোগ, হোটেল মালিক বুলবুল আহমদ একজন বিকৃত মানসিকতার ব্যক্তি, যার বিরুদ্ধে পূর্বেও নারী ও কিশোর বলাৎকারের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি কয়েকটি ঘটনায় তাকে স্থানীয়ভাবে শালিসে দোষী সাব্যস্তও করা হয়েছিল।
নাঈম নিখোঁজের আগের দিন হোটেল থেকে বাসায় ফিরে তার মাকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে ইশারায় জানান যে, হোটেল মালিক তার সঙ্গে জোরপূর্বক অনৈতিক আচরণ করেছেন। পরদিন পাওনা টাকা নিতে গেলে বুলবুল তাকে নানা অজুহাতে আটকে রাখেন এবং রাত গভীর পর্যন্ত ফিরতে না পেরে সে নিখোঁজ হয়ে যায়।
পরিবার একাধিকবার বুলবুলের কাছে খোঁজ নিতে গেলে তিনি নানা কথা বলে তাদের বিদায় দেন। পরে বুলবুল গোপনে ওসমানীনগর থানায় একটি জিডি করেন, যাতে ঘটনা আড়াল করা যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে ফেসবুকে কুলাউড়ায় অজ্ঞাত কিশোরের মরদেহ উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়ে। ছবি দেখে নাঈমের পরিবার নিশ্চিত হন যে, মৃতদেহটি নাঈমের। পরে তারা কৌশলে বুলবুলকে ডেকে ওসমানীনগর থানায় সোপর্দ করেন।
সোমবার ময়নাতদন্ত শেষে নাঈমের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। নাঈমের এই করুণ মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসী ও পরিবার নাঈম হত্যার বিচার এবং অভিযুক্ত বুলবুল আহমদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।