স্টাফ রিপোর্টার। জুড়ীতে নিষিদ্ধ এয়ারগান জব্দ করেছে বন বিভাগ।
গতকাল শনিবার (৩০ আগষ্ট) জুড়ী উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের বড়ধামাই গ্রামের আরিফুল ইসলাম (২২) এর কাছ থেকে জব্দ করা হয়। আরিফুল একই গ্রামের শফিক উদ্দিনের ছেলে।
জানা যায়, সম্প্রতি একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিতে দেখা যায়, অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম একটি পাত্রে একাধিক পাখি, কাঁধে এয়ারগানসহ রাখা হয়েছে। পরে বিষয়টি বনবিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের নজরে আসলে তারা তাৎক্ষণিক অভিযান চালায়।
বন্যপ্রাণী ও জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহদী সারওয়ার বলেন, “আমরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে অভিযান পরিচালনা করি। তাকে বাড়িতে না পেয়ে তার ব্যবহৃত এয়ারগানটি জব্দ করে নিয়ে আসি। আমরা পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
এ ঘটনায় স্থানীয় সচেতন মহলের কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, এ ধরনের অবৈধ শিকার কেবল বন্যপ্রাণীর জন্য নয়, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্যও বড় হুমকি।
পরিবেশকর্মী কামরুল হাসান বলেন, “এয়ারগান দিয়ে নির্বিচারে পাখি শিকার আমাদের জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের অন্যতম বড় কারণ। শুধু আইন প্রয়োগ নয়, পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সচেতনতার দায়িত্ব নিতে হবে। নাহলে প্রকৃতি রক্ষার লড়াই সফল হবে না।”
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ আমিনুর রহমান বলেন, “একটি পাখি হত্যা মানে শুধু একটি প্রাণ নষ্ট করা নয়, বরং একটি পুরো খাদ্যচক্র ভেঙে দেওয়া। পাখিরা কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করে, ফল-ফসলের পরাগায়নে সাহায্য করে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। এয়ারগান দিয়ে নির্বিচারে শিকার এ অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলছে। বনবিভাগকে নিয়মিত নজরদারি বাড়াতে হবে এবং সমাজকেও এ বিষয়ে দায়িত্বশীল হতে হবে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, আইনগত পদক্ষেপের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশ-সংরক্ষণমূলক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা না হলে এ ধরনের ঘটনা থামানো কঠিন হবে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।