স্টাফ রিপোর্টার। জুড়ী থানার অভ্যর্থনাকক্ষে বসে চা-শ্রমিক হেমন্তী গোয়ালা (৩৫) বিলাপ করে বলছিলেন, ‘কইছিল, পূজায় সবাইরে নতুন কাপড় কিনিয়া দিব, মন্দিরে নিয়া ঘুরাইতে যাইব। মানুষটারে কোন অসুরে মারিয়া ফেলল। আমার সব শেষ হই গেল।’
গত শুক্রবার হেমন্তীর স্বামী চা–শ্রমিক রামবচন গোয়ালা (৪০) নিখোঁজ হন। তাঁরা দুজনেই কুলাউড়া উপজেলার ক্লিভডন চা-বাগানের শ্রমিক ছিলেন। আজ রোববার দুপুরে রামবচনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্বজনদের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করে ছড়ায় ফেলে রাখা হয়েছে।
পুলিশ ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, এই চা–শ্রমিক দম্পতি ক্লিভডন চা-বাগানের শিবুটিলা এলাকায় থাকেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় রামবচন বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ ছিল। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান না পেয়ে স্বজনেরা শনিবার কুলাউড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। আজ রোববার দুপুরে খোঁজ করতে গিয়ে কাপনাপাহাড় চা-বাগানের পাহাড়ি ছড়ার কাছে কাঁচা রাস্তায় একজোড়া স্যান্ডেল ও রক্তের দাগ দেখতে পান স্বজনেরা। পরে ছড়ায় রামবচনের লাশ ভেসে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
রামবচনের স্ত্রী হেমন্তী গোয়ালা ও তাঁর চাচাতো ভাই ক্লিভডন চা-বাগানের শ্রমিক পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক অজিত গোয়ালা বলেন, রামবচনের সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ ছিল বলে তাঁদের জানা নেই। এ ঘটনায় তাঁরা জুড়ী থানায় হত্যা মামলা করবেন।
জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মৌলভীবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে রামবচনের ঘাড় ও থুতনিতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে হত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় কে বা কারা যুক্ত, সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।