স্টাফ রিপোর্টার।। কুলাউড়া: ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শ্রীপুর জালালিয়া ফাজিল মাদরাসা দীর্ঘ প্রচেষ্টা শেষে কামিল (স্নাতকোত্তর) শ্রেণিতে পাঠদানের প্রাথমিক অনুমতি পেয়েছে। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটিকে হাদিস বিভাগে কামিল স্তর খোলার অনুমোদন দিয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাতে মাদরাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শামসুল হক বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
এই অনুমোদনের মাধ্যমে মাদরাসাটি মৌলভীবাজার জেলার মধ্যে দ্বিতীয় এবং কুলাউড়া উপজেলার ইতিহাসে প্রথম বেসরকারি কামিল মাস্টার্স কোর্স চালু করা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে পরিণত হলো। মাদরাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শামসুল হক, গভর্নিং বডির নেতৃবৃন্দ এবং এলাকাবাসীর সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতায় এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। মাদরাসার সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে এই খবরকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও আনন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদরাসা পরিদর্শন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, কামিল (স্নাতকোত্তর) দুই বছর মেয়াদি হাদিস বিভাগে প্রাথমিক পাঠদান অনুমতির বিষয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে গঠিত পরিদর্শন কমিটির দাখিলকৃত প্রতিবেদন বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদরাসা পরিদর্শক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ আইউব হোসেন স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ শ্রীপুর জালালিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ বরাবরে প্রেরণ করা হয়। ওই আদেশে বলা হয়েছে, ২৭ আগস্ট ২০২৫ থেকে ২৬ আগস্ট ২০২৮ পর্যন্ত তিন বছরের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে কামিল (স্নাতকোত্তর) দুই বছর মেয়াদী হাদিস বিভাগে প্রাথমিক পাঠদানের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।
এরআগে, গত ১৫ অক্টোবর মাদরাসাটিতে কামিল স্তর অনুমোদনের লক্ষ্যে পরিদর্শনে আসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ রইছ উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মস্তফা মঞ্জুর এবং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক আরিফ আহমেদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি এডভোকেট এ. এন. এম. খালেদ লাকী, অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শামসুল হক, গভর্নিং বডির সদস্যবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। পরিদর্শন শেষে অতিথিবৃন্দ মাদরাসার সার্বিক পরিবেশ, শিক্ষা কার্যক্রম ও অবকাঠামো দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং মাদরাসাটিকে কামিল (মাস্টার্স) স্তরে উন্নীত করার ঘোষণা দেন।
মাদরাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শামসুল হক এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “মাদরাসা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যারা মাদরাসার সার্বিক উন্নয়নে কাজ করেছেন, তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। এছাড়া যারা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাদরাসাটিকে কামিল মাস্টার্সে উন্নীত করায় প্রশাসন, গভর্নিং বডি, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ এলাকার সর্বস্তরের মানুষ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। এই অনুমোদনের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের একটি নতুন দ্বার উন্মুক্ত হলো। এখন থেকে ফাজিল পাশ শিক্ষার্থীদের উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য জেলা বা বিভাগীয় শহরে যেতে হবে না।”
মাদরাসার কামিল স্তরে অনুমোদনের খবর পেয়ে মাদরাসার সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সমগ্র উপজেলা জুড়ে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও আনন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।