
স্টাফ রিপোর্টার, টরন্টো (কানাডা) ॥ ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এম শাহীন বলেছেন, দেশের পরিবর্তনে প্রবাসীদের ঐক্যই এখন সবচেয়ে বড় শক্তি। প্রবাসীদের ঐক্য অটুট রেখে অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “বিদেশে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী মেধাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি, কিন্তু আমাদের দুর্বলতা অনৈক্য। ঐক্য ছাড়া দাবি কণ্ঠেই সীমাবদ্ধ থাকে। এখন আমাদের সেই কণ্ঠকে দেশের শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছে দিতে হবে আরও উচ্চ, আরও স্পষ্টভাবে।”
১৮ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় কানাডার টরন্টোর ড্যানফোর্থে বাংলাদেশ সেন্টার মিলনায়তনে ‘আমরা কুলাউড়ী কানাডিয়ান, টরন্টো’ আয়োজিত সংবর্ধনা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ও বিশিষ্ট সমাজসেবক মুহিবুর রহমান খান। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ জামাল আহমদ। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুছ চৌধুরী ও সহ-সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন (কমরু)।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশিষ্ট রাজনীতিক ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী, ‘ঠিকানা’-র সাবেক বার্তা সম্পাদক ও লেখক শেখ শাহনেওয়াজ, কবি ও সাংবাদিক সাইফুল্লাহ মাহমুদ দোলাল, লেখক ও সাংবাদিক জসিম মল্লিক, প্রভাষক হিমাংশু বর্ধন, মৌলভীবাজার জেলা সমিতির সাবেক সভাপতি লায়েকুর রহমান চৌধুরী, বর্তমান সভাপতি সৈয়দ মাহবুব (চ্যানেল এস প্রতিনিধি) এবং কমিউনিটি নেতা লোকমান হোসেন।
এছাড়াও বক্তব্য দেন সাবেক কমিশনার মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী (খোকন), সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমান উল্ল্যাহ, সহসভাপতি আমির হোসেন সিদ্দিকী (জসিম), সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ রিপন, সুমাইয়া রিদি, অর্থ সম্পাদক তাহমিনা আক্তার চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী চৌধুরী (তরিক) প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম (নজরুল), সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মামুনুর রশীদ (হাসান), সহ-অর্থ সম্পাদক ওমর নাসির (কাঞ্চন), সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক রবীন্দ্র মল্লিক, প্রচার সম্পাদক মো. সোহেল আহমদ, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. আলী আকবর, সিরুজ্জামান সিদ্দিক, নুরুল ইসলাম (মঞ্জু) ও রাসেল আহমদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঠিকানার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এম এম শাহীন বলেন, “গত সাড়ে তিন দশক ধরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কণ্ঠস্বর হিসেবে ঠিকানা কাজ করে যাচ্ছে। এখন ঠিকানা অনলাইন সেই সীমানা ছাড়িয়ে বৈশ্বিক সংযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।”
প্রবাসীদের রাজনৈতিক অধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সংবিধানের কাঠামোর মধ্যেই প্রবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। অন্তত ৫০টি আসন প্রবাসীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা উচিত। কারণ প্রবাসীরা শুধু অর্থ পাঠান না; তারাই বাংলাদেশের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও আন্তর্জাতিক মর্যাদার অন্যতম স্তম্ভ।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা টাকার জন্য বাংলাদেশে যাই না, যাই ভালোবাসার জন্য—সম্পর্কের টানে, মাতৃভূমির আহ্বানে।”
রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এম এম শাহীন বলেন, “আজকের রাজনীতিতে কিছু দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্র লুটপাটে লিপ্ত ব্যক্তি এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত কিছু এমপি প্রমাণ করছে—পরিবর্তনের সময় এসে গেছে।”
তিনি বিশ্বাস করেন, দেশের প্রকৃত উন্নয়ন প্রবাসীদের হাত ধরেই সম্ভব। তার ভাষায়, “আমরা বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা রক্ষা করি, বিনিয়োগ আনি, জ্ঞান ভাগ করি—এটাই আমাদের জাতীয় দায়।”
নিজের জন্মভূমি কুলাউড়ার প্রতি আবেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এই মাটিই আমার শক্তি। এখানকার মানুষই আমাকে নেতা বানিয়েছে, সমাজে সম্মান দিয়েছে। আমি জীবনভর কুলাউড়াবাসীর কাছে ঋণী—অবশিষ্ট সময়টুকু তাদের সেবায় ব্যয় করতে চাই।”
সভা শেষে আয়োজক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং নৈশভোজের মধ্য দিয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।