
কুলাউড়ার দর্পণ নিউজ ডেস্ক।। জন্ম বনেদী রাজনৈতিক পরিবারে। দাদার বাবা নবাব আলী আমজাদ খান ছিলেন সিলেটের শীর্ষ জমিদার। আর দাদা আলী হায়দার খান ছিলেন মন্ত্রী। অথচ বাবা আলী সফদর খান (রাজা সাহেব) একজন বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এই জমিদারি প্রথার বিরুদ্ধেই লড়ে গেছেন। আবার চাচা আলী সরোয়ার খান ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশে কুলাউড়া আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত প্রথম জাতীয় সংসদ সদস্য (১৯৭৩)। অপর চাচা আলী ইয়াওর খান করতেন মুসলিম লীগ, পরে দীর্ঘদিন বিএনপি’র সভাপতি।
এমন এক রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান অ্যাডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাস খান সমসাময়িক রাজনীতিবিদদের মধ্যে ব্যতিক্রমী একজন ব্যক্তি। পেশায় তিনি মৌলভীবাজার জেলা বারের একজন আইনজীবী। রাজনীতি করছেন কয়েক দশক যাবৎ। প্রয়াত কাজী জাফরের ইউনাইটেড পিপলস পার্টি (ইউপিপি) এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন, পরে কাজী জাফরসহ যোগ দেন এরশাদের জাতীয় পার্টিতে। বর্তমানে তিনি জাতীয় পার্টি (জাফর) এর প্রেসিডিয়াম সদস্য।
অ্যাডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাস খান কুলাউড়া আসনে তিনবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। ১৯৮৮ সালে তিনি হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদের একতরফা নির্বাচনে নির্বাচিত হন। ১৯৯১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। নির্বাচনী ফলাফলে দেখা যায়, নবাব আলী আব্বাস খান চারটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনবার জয়ী হয়েছেন, যা সফলতার হার ৭৫%। তুলনামূলকভাবে বর্তমান সাংসদ জনাব সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ চারটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে দুইবার জয়ী হয়েছেন (৫০%) এবং সাবেক এমপি এম. এম. শাহীন পাঁচটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে দুইবার জয়ী হয়েছেন (৪০%)।
তারপরও, আমার দৃষ্টিতে তিনি একদম নির্লোভ ও নিরহংকার একজন মানুষ। সব পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে শিখেছেন। সব মানুষের সঙ্গে মিশতে জানেন।
২০২৬ সালের সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে সাধারণ মানুষের ধারণা জানতে আমরা অনুসন্ধান করেছি। প্রার্থীদের নিয়ে মানুষ তাদের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেছেন। আমরা জানি, বিয়ে বা নির্বাচন—এই দুটো সময় একজন ব্যক্তির সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, চারিত্রিক, সাংসারিক ও পারিবারিক সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। গুণের চাইতে দোষগুলো বেশি চর্চিত হয়। ভোট শুধু ভালো মানুষ হলে দেওয়া হয় না, বরং টাকা-পয়সা, ক্ষমতা, শিক্ষা, মানুষের সঙ্গে ব্যবহার, রাজনৈতিক অবস্থান, রোজগারের উৎস ইত্যাদিও বিচার করে মানুষ ভোট দেয়। ভোটের ময়দানে টাকা ও জনবল সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে।
মানুষের মুখ থেকে শোনা কথাগুলোর সারসংক্ষেপ এখানে তুলে ধরা হলো। উল্লেখ থাকা আবশ্যক যে, আমরা কারও পক্ষ বা বিপক্ষে নেই—সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ।
আজকের আলোচিত ব্যক্তি:
নওয়াব আলী আব্বাস খান
১৯৫৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের প্রখ্যাত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম নবাব আলী সফদর খান, যিনি গণমানুষের আপনজন ছিলেন। তার প্রোপিতামহ নবাব আলী আমজাদ খান পূর্ব সিলেটের বড় জমিদার ছিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলনে রাজা সাহেব সংগঠকের ভূমিকা পালন করে সাধারণ মানুষের অসংখ্য উপকার করেছেন।
অ্যাডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাস খান পেশায় আইনজীবী। তিনি ১৯৮৮, ১৯৯১ ও ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টি থেকে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা শুনে যাচ্ছেন।
জনগণের ধারণা অনুযায়ী, নওয়াব আলী আব্বাস খান সহজ-সরল, নির অহংকারী ও সৎ মানুষ। যে কোনো মানুষ তার কাছে গিয়ে সুখ-দুঃখের কথা বলতে পারে। তিনবার এমপি হয়েও কুলাউড়ার দৃশ্যমান উন্নয়ন অনেকাংশে হয়নি। এমপি হলে কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি তার সঙ্গী হয়ে টাউট বাটপার হিসাবে উপকৃত হয়েছেন। তবুও কুলাউড়ার মানুষের মনে তার প্রতি সমবেদনা, মায়া ও আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে।
আগামী নির্বাচনে তিনি জয়ী হবেন—এটাই বেশিরভাগ মানুষের ধারণা।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।