
মোহাম্মদ আজিজুস সামাদ
‘‘জন্মের সিলসিলা পীর-ব্রাহ্মণের প্রথা
মেধা-শ্রম-আকাংখা গড়ে যোগ্যতা’’
বীমা শিল্পের পথিকৃত মোহাম্মদ আজিজুস সামাদ। ১৯২৩ সালের পহেলা জানুয়ারী কুলাউড়া পৌরসভার কাছিমনগর গ্রামে জন্ম। পিতা মোঃ সওয়াব আলী, মাতা বেগম নজিবুন নেসা।
শিক্ষা জীবনের শুরু বি এইচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক- কুলাউড়া নবীণ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় ও সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক- সিলেট এম সি কলেজ, কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক (অনার্স) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। মেধার স্বীকৃতি স্বরূপ স্বর্ণ পদকসহ বহু পুরস্কার পেয়েছেন।
‘‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’’ এর সংবাদ পাঠক ও অনুবাদক হিসেবে নয়াদিল্লীতে কর্ম জীবনের পথচলা। পাক-ভারত আলাদা হবার পর বড় ভাই যুক্তফ্রন্টের সাবেক এম.পি মোহাম্মদ মুহিবুস সামাদ এর প্রুডেনশিয়াল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীতে ১৯৫১ সালে যোগদেন। পরবর্তীতে গ্রেট ইস্টার্ণ ইন্সুরেন্স বিভাগের প্রধান এবং ১৯৬৯ সালে ফেডারেল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন। ১৯৭২ সালে সুরমা জীবন বীমা কোম্পানীর চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ১৯৭৩ সালে সে সময়ের শিল্পমন্ত্রীর মাধ্যমে ইন্সুরেন্স একাডেমী প্রতিষ্ঠা করে প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নিযুক্ত হন। ১৯৭৭ সালে জীবন বীমা কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৫ সালের ২৯শে জুলাই দেশের প্রথম নন-লাইফ বীমা প্রতিষ্ঠান ‘‘ বাংলাদেশ জেনারেল ইন্সুরেন্স কোম্পানী, পিএলসি’’ সংক্ষেপে ‘বিজিআইসি’ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ঐ কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং চেয়ারম্যনের গুরু দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
মোহাম্মদ আজিজুস সামাদ ছিলেন একজন গুণি লেখক, লিখেছেন কয়েকটি গ্রন্থ। ১। যে ব্যবসা সম্মানের যে ব্যবসায় মূলধন লাগে না, ২। লাইফ ইন্সুরেন্স সেলিং ইন একশন, ৩। সাকসেসফুল এজেন্সি বিল্ডিং, ৪। সাধারণ বীমার অ আ ক খ, ৫। শনিবারের চিঠি এবং ৬। জানা অজানা রবীন্দ্রনাথ। উনার লেখা ইংরেজী গ্রন্থ গুলোর জন্য ইউনাইটেড নেশনের আঙ্কটান্ডের বীমা অভিজ্ঞদের তালিকায় তাঁর নাম যুক্ত হয়েছে।
কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ- শ্রেষ্ঠ বীমা ব্যক্তিত্বের এ্যাওয়ার্ড, জাতীয় বিজনেস এ্যাওয়ার্ড, ইউনাইটেড স্টেট্স মেরিন কর্পস্ এ্যাওয়ার্ড, চট্রগ্রম বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস রিসার্স ব্যুারো কর্টৃক এ্যাওয়ার্ড, বাংলাদেশ ইন্সিওরেন্স এক্সিকিউটিভ ক্লাব(বিআইইসি) কর্তৃক মরণোত্তর এ্যাওয়ার্ড, ডিএইচএল ও ডেইলি স্টার কর্তৃক মরনোত্তর বাংলাদেশ বিজনেস এ্যাওয়ার্ড, ২০২০ সালে প্রথম জাতীয় বীমা দিবসে বীমা শিল্পে অসামান্য অবদানের জন্য মরনোত্তর রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় ভূষিত হন। ২০০৫ সালের ১৭ অক্টোবর তিনি ইন্তেকাল করেন। কুলাউড়ার পথে প্রান্তরে।। লেখক ওয়াহিদ মুরাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।