আজকের বিশ্লেষণে থাকছেন-বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের সম্মানিত আমীর ডাক্তার শফিকুর রহমান।
এই আসনটিতে গত বছর ২০২৪ এর ডামি-আমি নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিলো ২,৮৫,৪৭২ জন । ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১০৪ টি। আগামী নির্বাচনে ভোটার-ভোট কেন্দ্র বৃদ্ধি পেতে পারে।
১ টি পৌরসভা ও ১৩ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত কুলাউড়া উপজেলা।
২২ টি চা বাগান ৩৪ টি পুন্জি রয়েছে কুলাউড়া উপজেলায়।
প্রায় ৫০ হাজারেরও অধিক চা-শ্রমিকের ভোট।
বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহামান মৌলভীবাজার জেলা কুলাউড়া উপজেলার, ভাটেরা ইউনিয়নের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৭৩ সালে জাসদ ছাত্রলীগের মাধ্যমে তিনি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। পরবর্তীতে ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরে যোগদান করেন। রাজনৈতিক দক্ষতা ও বিচক্ষণতায় অভিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ ২০১৬ সালে দলের সেক্রেটারি জেনারেল এবং ধাপে ধাপে বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলটির আমীরের দায়িত্ব পালন করছেন।
এই পর্যন্ত কখনোই তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারেননি। অবশ্য উনার স্ত্রী ডাঃ আমিনা বেগম অষ্টম জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন। আওয়ামী সরকারের স্বৈরশাসনের ১৬ বছর পূর্বে সংসদ নির্বাচনে তিনি এই আসনে চারদলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী হলেও(২০০১ সাল)বিজয়ী হওয়ার মতো বা উল্লেখ করার মতো ভোট ডাঃশফিকুর রহমান সাহেব পাননি।
বিভিন্ন তথ্যমতে যতটুকু জানা যায়-জামায়াতের আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান ঢাকার কোন আসনে নির্বাচন করে বিজয়ী হওয়ার মতো অবস্থান এখনো তৈরী করতে পারেননি, বলা যায় একেবারেই ক্ষীণ। সিলেটেও প্রায় একই অবস্থা। ইদানিং খুব ঘনঘন তিনি কুলাউড়া উপজেলা সফর করতে দেখা যাচ্ছে। ঘুরে ফিরে কুলাউড়া উপজেলার উপরই ভর করতে পারেন। এখানেই ঈগল দৃষ্টি দলটির। যদিও বিজয়ী হওয়ার মতো ভোট ব্যাংক তাদের এখানেও নেই।
তথাপি, তিনি প্রার্থী হলে-উনাকে মোকাবেলায় বিএনপির কোনরুপ দৌড়ঝাঁপের প্রয়োজন হবে বলে মনে হয় না। হেসে খেলেই হয়তো বিএনপির প্রার্থীর গলায় বিজয়ের মালা পড়ানোর সম্ভাবনাই বেশি। যদি বিএনপি থেকে মনোনিত দলের যে কাউকে “ধানের শীষ” প্রতীকে প্রার্থী দেওয়া হয়।
চা-বাগান বেষ্টিত কুলাউড়া উপজেলায় জামায়াত ইসলাম কখনোই ভোট ব্যাংক গঠন করতে পারে নি। আগামীতেও পারবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে কিছু ভোট হয়তো বেড়েছে। কারন, বিশাল ও শক্তিশালী কর্মীবাহিনী নিয়ে বিএনপির দূর্গ বলা হয় এই আসনটি। বরং পুর্বের ন্যায় আরো জনবল কর্মীবল সমর্থক বৃদ্ধি পেয়েছে বিএনপির।
তাছাড়া, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ওয়ার্ড কমিটি থেকে শুরু করে উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ে শক্তিশালী বিএনপির নেতাকর্মী কর্তৃক গঠিত কমিটি রয়েছে। তাও বিশাল কর্মী বাহিনী। বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে বিএনপির।
এই আসনে জামায়াত ইসলামের ভোট ব্যাংক যেমন নেই তেমনি, ইউনিয়ন পর্যায় থেকে পৌরসভা উপজেলা পর্যায়ে যে সামান্য সংখ্যক নেতা কর্মী সমর্থক রয়েছেন, তা দিয়ে নির্বাচনের মাঠে বিজয়ী হওয়া শুধু স্বপ্নই দেখতে পারেন, কোন মিরাক্যাল ব্যতীত এটি বাস্তবায়িত করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
তারপরেও রাজনীতির শেষ অবশিষ্ট বলা মুশকিল। সেক্ষেত্রে কোন দৃশ্যমান বা অদৃশ্য ইরাশায় অথবা রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক কৌশলগত কোন কারণে যদি, ডাক্তার সাহেব আসনটি নিয়ে নিতে পারেন তবে, সব সমীকরণ পাল্টে যেতে পারে।
যদি বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় এবং দেশ পরিচালনায় সরকার গঠন করে, তবে বিরোধী দল কারা হতে পারেন। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম না কি, অন্য কোন দল। এটি একটি বিষয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিরোধী দল হলে সেক্ষেত্রে, বিরোধী দলের প্রধান যিনি হবেন তিনি, নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য হতে হবে।
এসব কিছুই সময় সিচুয়েশনের উপর নির্ভর করছে। সেটার জন্যও আরো কিছুদিন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
সর্বোপরি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান সাহেবের আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া, বিশাল এক চ্যালেন্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি যদি কোন আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে না পারেন তবে, তিনি ব্যক্তি হিসাবে অস্তিত্ব সংকটের পাশাপাশি, দলের শীর্ষ নেতা-আমীর হিসেবে এবং এই রাজনৈতিক দলটির জন্যও ; লজ্জাজনক হবে, তাই নয় কি ?
ভোটাররা কাকে বেছে নেন, সেটি দেখার অপেক্ষায় পুরো জাতি।
আগামী পর্বে আসছি-দেশী ও প্রবাসী প্রার্থী নিয়ে।
সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন। সবাইকে ধন্যবাদ সহ সবার প্রতি রইলো শুভেচ্ছা ও শুভকামনা অবিরাম।
প্রবাস থেকে-
মোঃ শফিকুজ্জামান চৌধুরী(রিপন)
তাংঃ ০৭-০৭-২০২৫।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।