কুলাউড়ার দর্পণ রির্পোট।।
মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের এক মানসিকভাবে অসুস্থ নারী হঠাৎ করে মাদারীপুরের টেকেরহাটে চলে আসেন। কীভাবে এসেছেন—তা নিজেও জানেন না তিনি। এমন সময় টেকেরহাট আর্মি ক্যাম্পের গেটের সামনে বৃষ্টিতে ভিজে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় তাকে দেখতে পান ক্যাম্পের কর্তব্যরত সেনাসদস্যরা।
সেই সময় উপস্থিত ছিলেন কুলাউড়ার সন্তান সৈয়দ কামরুল ইসলাম সৌরভ। নারীর মুখে সিলেটি ভাষা শুনে তিনি কথা বলেন এবং জানতে পারেন, তার বাড়ি কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নে, স্বামীর বাড়ি ফটিকউলিতে। নারী জানান, তিনি বাড়ি ফিরতে চান, কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছেন না। ফরহাদ উদ্দিন তখন বিষয়টি তার সহকর্মী সৈনিকের মাধ্যমে ক্যাম্পের অন্যদের জানায়।
পরে সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে নারীকে ক্যাম্পে নিয়ে যান এবং খাবার দেন। তার ক্ষুধার্ত অবস্থা দেখে সেনাসদস্যরা আরও আন্তরিক হন। এরপর তিনি একটি ফেসবুক পোস্ট দেন নারীর ছবি ও সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে। এর পড়ে দৃষ্টিগোচর হয় কুলাউড়ার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার তারাও বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরে। আলহামদুলিল্লাহ, মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যেই নারীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়। কাতারে অবস্থানরত তার নাতি যোগাযোগ করেন এবং তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ জানান। সেনাসদস্য বিষয়টি তার ক্যাম্প কমান্ডারকে জানান এবং সব ব্যাখ্যা দেন। কমান্ডার মানবিকতা দেখিয়ে ওই সেনাকে তিনদিনের ছুটি প্রদান করেন এবং নিজ দায়িত্বে নারীকে বাড়ি পৌঁছে দিতে নির্দেশ দেন।
যেহেতু মাদারীপুর থেকে মৌলভীবাজারে সরাসরি কোনো বাস নেই, তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন—মাদারীপুর থেকে ঢাকায়, সেখান থেকে মৌলভীবাজার এবং শেষ পর্যন্ত কর্মধা ইউনিয়নে পৌঁছে দেবেন।
তিনি নারীকে পুনরায় রাতের খাবার খাইয়ে, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ নিশ্চিত করে রাতে রওনা দেন।
তিনি বলেন, আল্লাহর কুদরত না থাকলে হয়তো এমনটা হতো না। ফরহাদ যদি সেখানে না থাকতো, কেউ সিলেটি না বুঝতো, তাহলে হয়তো এই নারী আবার হারিয়ে যেতেন। আজ আবারো প্রমাণিত হলো, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মানবতার পাশে থাকে।
এই ঘটনা যেন মানবতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এমন উদ্যোগে ক্যাম্পের সদস্যরা যেমন গর্বিত, তেমনি কৃতজ্ঞ পুরো এলাকা।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।