মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে নিকড়ী ছড়ার পাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে চলাচলের রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অর্ধশত পরিবারের লোকজন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে ছড়ার ভাঙন রোধে ও তা দ্রুত মেরামতের দাবিতে এলাকার বাসিন্দারা সম্প্রতি বড়লেখা পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছেন।
লিখিত আবেদন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ও বড়লেখা পৌরসভার পানিধার এলাকার বুক চিরে বয়ে যাওয়া নিকড়ী ছড়া মিশেছে হাকালুকি হাওরের সঙ্গে। এই ছড়ার এক পাড়কে বড়লেখা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পানিধার গ্রামের অর্ধশত পরিবার দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের রাস্তা হিসাবে ব্যবহার করে আসছেন। নিকড়ী ছড়াটি একসময় অনেক প্রশস্ত ছিল। ভারী বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি দ্রুত নেমে যেত। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীরা ছড়ার বিভিন্ন স্থানে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ ও ভরাট করেছেন। এতে ছড়াটি সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ছড়ার খনন না হওয়ায় পানি ধারণক্ষমতা কমে গেছে। ফলে ভারী বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি ছড়া উপচে আশেপাশের ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে ঢুকে পড়ছে। এতে স্থানীয়রা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এদিকে সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে ছড়ার এক পাড়ে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। এতে স্থানীয় একটি এতিমখানার শিশুদের পাশাপাশি এলাকার লোকজন চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, বড়লেখা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড পানিধার গ্রামের মোহাম্মদ ওয়ালি উল্লাহর বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছড়ার কিছু জায়গায় বাঁশের বেড়া দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়েছে। ঝুঁকির মুখে রয়েছে ওয়ালি উল্লাহর বাড়ির টিনের সীমানা প্রাচীর। স্থানীয়রা ছড়ার পাড়ের ভাঙা অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন।
এলাকার বাসিন্দা মো. শাহরিয়ার ফাহিম, সুমন আহমদ, হুসাইন আহমদ, হেলাল আহমদ, কামাল আহমদ, সিরাজ মিয়া, নানু আহমদ, মরুফ আহমদ ও তানভীর ইমতিয়াজ তুহিন প্রমুখ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে ছড়ার এক পাড়কে চলাচলের রাস্তা হিসাবে ব্যবহার করছি। আগে ছড়াটি অনেক বড় ছিল। বৃষ্টির পানি সহজেই নেমে যেত। এখন দখল আর ভরাটের কারণে ছড়াটি দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে। ফলে অল্প বৃষ্টি হলেই ছড়া উপচে আশেপাশের ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে ঢুকে পড়ছে। সাম্প্রতিক বন্যায় ছড়ার এক পাড়ে ভাঙন দেখা দেওয়ায় আমাদের চলাচলের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অনেক দিন পার হলেও ছড়ার পাড় মেরামত করা হয়নি। আমরা সংশ্লিষ্টদের নিকট দ্রুত ছড়ার ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি তা মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে বড়লেখা পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, নিকড়ী ছড়ার ভাঙনের বিষয়টি জেনেছি। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি পৌরসভার মাসিক সভায় আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।